সারাক্ষণ ঘুম ঘুম ভাব বা ক্লান্তি শুধু অলসতার কারণে হয় না—পেছনে থাকতে পারে নানা শারীরিক ও মানসিক কারণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত ঘুম ভাব বা দিনের বেশিরভাগ সময় ঘুম ঘুম লাগা শরীরের জন্য সতর্ক সংকেত হতে পারে।
সাধারণত, একজন ব্যক্তির জন্য দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম পর্যাপ্ত। কিন্তু সারারাত ঘুমিয়েও সকালে উঠতে অনেকের ক্লান্তি অনুভব হয়। সকালের নাস্তা সারতেই চোখে যেন ঘুম আবারও জেঁকে বসে। ঘুম পাওয়া খুবই স্বাভাবিক, তবে মাত্রাতিরিক্ত ঘুম কী কারণে হয় তা জেনে নিন-
বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত ভিটামিন ডি ও ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতির কারণে শরীরে এই আলস্য ভাব দেখা যায়।
ভিটামিন ডি
ভিটামিন বি (বি১২)
ভিটামিন ‘বি’, বিশেষ করে বি-১২ হলো সেই অন্যতম প্রধান ভিটামিন যার অভাবে ক্লান্তি বাড়ে ও ঘুম বেশি পেতে থাকে। এছাড়া, রক্তস্বল্পতার কারণে ক্লান্তি পেতে পারে, যা অতিরিক্ত ঘুমের দিকে পরিচালিত করে।
লোহিত রক্তকণিকা এবং ডিএনএ উৎপাদনের জন্য ভিটামিন বি১২ অপরিহার্য। এটি স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতার জন্যও অপরিহার্য। যখন আপনার শরীর পর্যাপ্ত ভিটামিন বি১২ পায় না তখন আপনি সারাক্ষণ ক্লান্ত বোধ করতে পারেন। এমনকি ঘুম ঘুম বোধ হতে পারে।
অন্যদিকে সয়াবিন খেলেও ভিটামিন ডি ও ভিটামিন বি১২ দুটির চাহিদাই পূরণ হয় ভালোভাবে।
এছাড়া চিকিৎসকদের মতে, পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া, মানসিক চাপ, রক্তস্বল্পতা, থাইরয়েডের সমস্যা, ডায়াবেটিস, স্লিপ অ্যাপনিয়া, ডিপ্রেশন কিংবা পুষ্টিহীনতা এ সমস্যার প্রধান কারণ হতে পারে। এছাড়া নিয়মিত রাত জাগা, অতিরিক্ত কফি বা অ্যালকোহল গ্রহণ, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রমের অভাবও ঘুম ঘুম ভাব বাড়িয়ে তোলে।
ভিটামিনের ঘাটতির এই লক্ষণ আগে থেকে দেখে সচেতন না হলে পরে বড় কোনো সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি দীর্ঘদিন ধরে প্রতিদিনের কাজে প্রভাব ফেলার মতো অতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব থাকে, তবে তা অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত পানি পান এবং সঠিক ঘুমের সময় মেনে চলা প্রয়োজন।