রাশিয়ার জলসীমার কাছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন করার পর দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের একটি মন্তব্যের জবাবে ট্রাম্প এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। অনেকেই এটিকে শীতল যুদ্ধের কৌশল হিসেবে দেখছেন।
এই সিদ্ধান্ত ঘিরে সমালোচনা বৃদ্ধি পেলেও ট্রাম্প এটিকে আক্রমণ নয়, বরং ‘প্রয়োজনীয় সতর্কতা’ হিসেবে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংঘাত শুরু করার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে একজন সাবেক রুশ কর্মকর্তার ‘বেপরোয়া হুমকির’ পর নীরব থাকা সম্ভব ছিল না।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের পর আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা চলছে যে সমুদ্রের তলদেশে কোন দেশের ক্ষমতা বেশি।
মার্কিন নৌবাহিনীতে অন্তত ১৪টি ওহাইও-ক্লাস ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিন রয়েছে, যা ‘বুমার’ নামে পরিচিত। এই সাবমেরিনগুলো গোপনে চলাচল করতে এবং নির্ভুলভাবে পারমাণবিক অস্ত্র নিক্ষেপ করতে সক্ষম। এগুলি মেরামত ছাড়া ১৫ বছর পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে।
এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্রের বহরে তিন ধরনের পারমাণবিক চালিত ফাস্ট অ্যাটাক সাবমেরিন রয়েছে: ভার্জিনিয়া-ক্লাস, সিউলফ-ক্লাস এবং লস অ্যাঞ্জেলেস-ক্লাস। এই সাবমেরিনগুলো শত্রু জাহাজ ধ্বংস করতে বিশেষভাবে পারদর্শী।
অন্যদিকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাবমেরিন বহর রয়েছে রাশিয়ার, যার সংখ্যা প্রায় ৬৪টি। এর মধ্যে ১৪টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিন রয়েছে, যেমন বোরেই-ক্লাস ও ডেল্টা আইভি-ক্লাস। এগুলি রাশিয়ার পারমাণবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
রাশিয়ার নৌবাহিনীতে চারটি ইয়াসেন-ক্লাস পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিনও আছে। এগুলি আকারে ছোট হলেও স্থল ও সমুদ্রে দূরপাল্লার হামলা চালাতে সক্ষম।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার এই নতুন পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক কূটনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে জটিল প্রশ্ন তৈরি করছে। এটি কি পারমাণবিক কূটনীতির নতুন সূচনা করবে, নাকি পারমাণবিক উত্তেজনার এক নতুন যুগের সূচনা হবে, তা এখনো অনিশ্চিত। তারা মনে করেন, পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগে কৌশলগত সংযম এবং উত্তেজনা প্রশমন এখন যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি।
সূত্র: দ্য ইকোনমিক টাইমস