বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় সাবেক গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় আরেক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া যুগ্ম আহ্বায়কের নাম জানে আলম অপু (কাজী গৌরব অপু)। এ ঘটনার পর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
শুক্রবার (১ আগস্ট) ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রাজধানীর ওয়ারী থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেফতার করে বলে জানা গেছে।
এর আগে, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সেল সম্পাদক (দফতর) মাহফুজুর রহমানের দুটি পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে কতিপয় ব্যক্তি সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গেলে সেখানে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপু ও কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমানের সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায়।
গঠনতন্ত্রের ধারা ৩.১ অনুযায়ী, সংগঠনের ভাবমূর্তি ও শৃঙ্খলার পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা এবং চাঁদাবাজির সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্টতার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ প্রাপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার ও সদস্য সচিব জাহিদ আহসানের নির্দেশনায় জানে আলম অপু ও আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমানকে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সব পর্যায়ের দায়িত্ব ও সদস্যপদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ অনুরোধ জানায়।
বহিষ্কারের পর নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন জানে আলম অপু। তিনি লেখেন, প্রথমত আমি গ্রেফতার হইনি, দ্বিতীয়ত আমি কোথাও চাঁদাবাজিও করিনি। আজকের (শনিবার) গুলশানের ঘটনায় আমি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনোভাবেই জড়িত ছিলাম না।
মামলার এজাহারে বাদি বলেছেন, গত ১৭ জুলাই আসামি আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু (জানে আলম অপু) নিজেদের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বাদীর গুলশান- ২ এর বাসায় হুমকি ধমকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার চাঁদা দাবি করেন। অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে আওয়ামী লীগের ও স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেফতার করানোর হুমকি দেন।
সেই ভয়ে তাদের ১০ লাখ টাকা দেন তিনি। পরে ১৯ জুলাই পুনরায় বাকি ৪০ লাখ টাকার জন্য হুমকি দেন। এরপর ২৬ জুলাই চাঁদা নিতে এলে গুলশান থানা পুলিশ তাদের আটক করে। এর মধ্য থেকে কাজী গৌরব অপু নামে একজন পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, গত শনিবার রাজধানীর গুলশানে সমন্বয়ক পরিচয়ে আবু জাফর (সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের স্বামী) নামে একজন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীর বাসায় চাঁদাবাজি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন ৫ জন। তারা হলেন আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান (রিয়াদ), ইব্রাহীম হোসেন, মো. সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব ও মো. আমিনুল ইসলাম। রিয়াদের নেতৃত্বে চাঁদাবাজির এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ইতোমধ্যে চারজনকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।