spot_img

মিথ্যা প্রশংসা করা ও শোনা নিষিদ্ধ

অবশ্যই পরুন

কিছু মানুষ প্রশংসা শুনতে বেশ ভালোবাসে। তাদের আশপাশের অতি চালাক লোকেরা তাদের বিভিন্ন অবান্তর প্রশংসা করে খুশি রাখতে চায়। ক্ষেত্র বিশেষে তাদের মিথ্যা প্রশংসা করে তাদের দিয়ে নিজেদের বিভিন্ন উদ্দেশ্য হাসিল করিয়ে নেয়, যা ওই প্রশংসা প্রিয় লোকটি টেরই পায় না।

এভাবে কাউকে হাওয়া দেওয়ার জন্য মুখের ওপর তার মিথ্যা প্রশংসা করা তাকে বিভ্রান্ত করার শামিল। এই বিভ্রান্তি তার জীবন, ঈমান ও আমলের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। সে বাস্তবতার বাইরে গিয়ে নিজেকে চিন্তা করতে শুরু করে। ফলে বাস্তব পৃথিবীকে তার কল্পনার রাজত্ব মনে করে এবং এক সময় কঠিন বিপদের সম্মুখীন হয়। তাই কারো প্রশংসা করার ক্ষেত্রে এতটা বাড়াবাড়ি করা উচিত নয় যে তা তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। আল্লাহর রাসুল (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে এ ব্যাপারে কঠোর ভাবে সতর্ক করেছেন। আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) এক লোককে অন্য লোকের প্রশংসা করতে শুনলেন এবং সে প্রশংসায় বাড়াবাড়ি করল। তখন তিনি বলেন, তোমরা তো লোকটিকে মেরে ফেললে, কিংবা বলেন, লোকটির মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিলে। (বুখারি, হাদিস : ৬০৬০)
মহানবী (সা.)-এর এই বাণী গভীর অর্থ বহন করে। বর্তমান যুগেও দেখা যায়, বিভিন্ন উচ্চপদস্থ লোকজন বা বিভিন্ন উদ্যোক্তাদের আশপাশে থাকা অতি চালাক লোকরা তাদের বসকে মিথ্যা প্রশংসা করে তাকে এমন মানসিক বিভ্রমে ফেলে দেয়, যে সে এক সময় বাস্তবতা থেকে অনেক দূর চলে যায়, আর মিথ্যা প্রশংসা করা সুযোগ সন্ধানি লোকরা তার চিন্তার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাকে দিয়ে অসংলগ্ন কাজ করায়। ফলে এক সময় তাকে এর চরম মূল্য দিতে হয়। কিন্তু সুযোগ সন্ধানী মিথ্যা প্রশংসাকারী চাটুকাররা ততদিনে মধু খেয়ে অন্য কোনো ফুলে উড়াল দেয়।

এ জন্য কেউ যদি অমূলক ও অবান্তর প্রশংসা করলে তাতে খুশি না হয়ে তাকে থামিয়ে দেওয়া উচিত। তার ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত। সে চাটুকার। মিকদাদ বিন আমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমাদেরকে চাটুকারদের মুখে ধুলা নিক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৭৪২)

এবং কেউ দরদ নিয়ে দোষ-ত্রুটি ধরিয়ে দিলে তার উপর বিরক্ত হওয়া উচিত নয়, কারণ সে মূলত উপকার করতে চাইছে। ওমর (রা.) বলতেন, আল্লাহ তার ওপর রহম করুন, যে আমার ভুল-ত্রুটি আমাকে জানিয়ে দেয়। (মাজমাউল আমছাল : ১/৩১৪)
আবার কোনো বিষয়ে অবদান না রেখে কৌশলে সে বিষয়ে প্রশংসা কুড়ানোর চেষ্টা করা কিংবা নিজেকে প্রশংসিত করে রাখার বিভিন্ন মহলে সিন্ডিকেট প্রশংসাকারী তৈরি করা জঘন্য অপরাধ। এটা মুনাফিকের স্বভাব। এ ধরনের লোকদের ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘যারা স্বীয় কৃতকর্মে সন্তুষ্ট এবং তারা যা করেনি তার জন্য প্রশংসা প্রার্থী, এমন লোকদের সম্পর্কে ধারণা কোরো না যে, তারা শাস্তিবিমুক্ত, বরং তাদের জন্য আছে যন্ত্রণাদায়ক কঠিন শাস্তি।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৮৮)

আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে কিছু মুনাফিক তাঁর সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়া থেকে পিছপা হত। এতে তারা নিজেদের মধ্যে আনন্দবোধ করত। তারপর যখন রাসুল ফিরে আসতেন, তখন তার কাছে ওজর পেশ করত এবং অন্যান্যভাবে নিজেদের প্রশংসা শুনতে চাইত। তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াত নাজিল করেন। (বুখারি, হাদিস : ৪৫৬৭)

অতএব নিজের প্রশংসা শোনার জন্য কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করা কোনো মুমিনের জন্য সমীচীন নয়। মহান আল্লাহ সবাইকে এরকম কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন।

সর্বশেষ সংবাদ

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে পর্তুগাল!

পর্তুগাল আগামী সেপ্টেম্বর মাসেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টিনিগ্রো দপ্তর। আজ বৃহস্পতিবার...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ