ইংলিশ ফুটবলের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এক বিস্ময়কর সিদ্ধান্ত নিয়েছে—সাবেক তিন কিংবদন্তি খেলোয়াড় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, ডেভিড বেকহ্যাম ও এরিক কান্তোনার নামে জার্সি উৎপাদন ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। এমন সিদ্ধান্তে হতবাক সমর্থকরা, কারণ ইউনাইটেডের ইতিহাস গঠনে এই তিন তারকার ভূমিকা ছিল অনন্য। তাদের নামে মুদ্রিত জার্সির বিপুল চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ক্লাবের এ সিদ্ধান্ত নতুন করে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে ফুটবলবিশ্বে।
চলতি মাসের শুরুতে ২০২৫-২৬ মৌসুমের জন্য অ্যাওয়ে জার্সি প্রকাশ করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। নতুন এই কিট হাতে নেওয়ার রোমাঞ্চে ভুগছিলেন ক্লাবটির সমর্থকরা। সিমোন লয়েড নামে এক সমর্থক নতুন জার্সি সংগ্রহের লক্ষ্যে গিয়েছিলেন ইউনাইটেডের মেগা স্টোরে। সেখানেই তার চোখে ক্লাবের পক্ষ থেকে দেওয়া তিন তারকার নামসম্বলিত জার্সি নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ধরা পড়ে।
ওই নোটিসে ‘শার্ট প্রিন্টিং পলিসি’র চার নম্বর পয়েন্টে ওল্ড ট্রাফোর্ডের ক্লাবটি বলছে, ‘লাইসেন্স সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতার কারণে আমরা কান্তোনা, বেকহ্যাম ও রোনালদোর জার্সি প্রিন্ট করতে পারছি না।’ হঠাৎ এমন নির্দেশনার ব্যাখ্যা দিয়ে ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য সান’কে জানিয়েছে, তিন আইকন কান্তোনা-বেকহ্যাম-রোনালদোর নিজস্ব ইমেজ রাইটস আছে। এর মানে ক্লাব তাদের নামে মুদ্রিত জার্সি মেগা স্টোরে রাখতে পারবে না।
এ ছাড়া ক্লাবটি নিশ্চিত করেছে, কেবল এবারের মৌসুমের জার্সি মিলবে মেগাস্টোরে। এর বাইরে অতীতে ব্যবহৃত পুরোনো কোনো ফন্টও সমর্থকরা চাইলে পাবেন না। নতুন এই নির্দেশনায় বিস্মিত ওল্ড ট্রাফোর্ডের সমর্থকরা। ক্লাবের সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনায় মেতেছেন। এতদিন পর্যন্ত সমর্থকরা চাইলে সাবেক তিন তারকার নামসম্বলিত জার্সি কিনতে পারতেন। যদিও তিনজনই ইউনাইটেড অধ্যায় শেষ করেছেন অনেক আগে।
কান্তোনা প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের জনপ্রিয় মুখ ছিলেন নব্বইয়ের দশকে। ১৯৯২ সালে তার উপস্থিতিতেই ইউনাইটেড চতুর্থ লিগ (প্রিমিয়ার লিগ) শিরোপা জিতেছিল। ক্লাবটির যুব একাডেমিতে বেড়ে উঠেছিলেন বেকহ্যাম, মূল দলের হয়ে জিতেছেন ৬টি লিগ টাইটেল এবং ১৯৯৯ মৌসুমে ট্রেবলজয়ী দলেরও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন সাবেক এই ইংলিশ তারকা। অন্যদিকে, পর্তুগিজ সুপারস্টার রোনালদোর বড় তারকা হয়ে ওঠার বড় ভূমিকা রয়েছে ওল্ড ট্রাফোর্ডের। ক্লাবটিতে থাকাকালে রোনালদো তিনটি লিগ টাইটেল ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পাশাপাশি ২০০৮ সালে ব্যালন ডি’অরও জেতেন।