উত্তর বেইজিংয়ের কয়েকদিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ এ তথ্য জানায়।
গত কয়েক দিনে উত্তর চীনে তীব্র বৃষ্টিপাত দেখা দিয়েছে, যার ফলে ব্যাপক বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। বেইজিংয়ের পার্শ্ববর্তী ‘হ্যবেই’ প্রদেশে একটি ভূমিধসে চারজন নিহত হয়েছে এবং আরও আটজন নিখোঁজ রয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) বেইজিংয়ের পার্শ্ববর্তী উত্তর-পূর্বের মিয়ুন জেলার পাহাড়ি অঞ্চলে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ইয়াংচিং জেলার আরও দুইজন প্রাণ হারিয়েছেন বলে চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থা সিসিটিভি জানিয়েছে।
এই বৃষ্টিপাতের ফলে বহু সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১৩৬টি গ্রামে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। সিসিটিভির তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৮০,০০০ মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ১৭,০০০ জন মিয়ুন জেলার বাসিন্দা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বাদামি রঙের বন্যার পানি আবাসিক এলাকায় ঢুকে পড়েছে, গাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে ফেলছে এবং রাস্তা নদীতে পরিণত হয়েছে মিয়ুনে।
সোমবার (২৮ জুলাই) বেইজিং তার সর্বোচ্চ স্তরের বন্যা সতর্কতা জারি করে এবং বাসিন্দাদের নদীর কাছাকাছি না যাওয়ার আহ্বান জানায়। শহরের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রও বৃষ্টিপাতের জন্য লাল সতর্কতা জারি করে — যা চার স্তরের মধ্যে সর্বোচ্চ — এবং রাতভর প্রবল বর্ষণ, আকস্মিক বন্যা, কাদা ধস ও পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের ‘চরম ঝুঁকির’ বিষয়ে সতর্ক করে।
সোমবার (২৮ জুলাই) স্থানীয় সময় সন্ধ্যার আগেই কর্তৃপক্ষ শহরের সব স্কুল বন্ধ করে দেয়, সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দেয় এবং গ্রামীণ হোমস্টে ও ক্যাম্পসাইটগুলোর কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দেয়।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, এই ভারী বৃষ্টিপাত, বন্যা ও সংশ্লিষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো বেইজিং ও উত্তরাঞ্চলীয় হ্যবেই, জিলিন এবং শানডং প্রদেশে ‘গুরুতর প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষতি’ ডেকে এনেছে।
তিনি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন নিখোঁজদের খোঁজে ‘সবধরনের প্রচেষ্টা’ চালাতে, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের যথাযথভাবে সরিয়ে নিয়ে যেতে এবং প্রাণহানি যতটা সম্ভব কমিয়ে আনতে।