spot_img

ডেন্টাল ইমপ্লান্ট করার পর যত্ন নেবেন কীভাবে? চিকিৎসকের পরামর্শ

অবশ্যই পরুন

ডেন্টাল ইমপ্লান্ট বর্তমানে দাঁত হারানো রোগীদের জন্য সবচেয়ে কার্যকর এবং টেকসই সমাধান হিসেবে বিবেচিত। তবে ইমপ্লান্ট বসানোর পর সঠিকভাবে যত্ন না নিলে এর স্থায়িত্ব ও কার্যকারিতা হুমকির মুখে পড়তে পারে। ইমপ্লান্ট বসানোর পর প্রথম ৪৮ ঘণ্টা ও পরবর্তী কয়েক মাস যথাযথ পরিচর্যা না করলে ইনফেকশন, ব্যথা বা ইমপ্লান্ট ব্যর্থতার ঝুঁকি থাকে।

 ডেন্টাল ইমপ্লান্টকে এ কারণে অবহেলা করা ঠিক নয়। এ জন্য ইমপ্লান্ট পরবর্তী পরিচর্যার ব্যাপারে কথা বলেছেন রাজধানীর বনানীর ডেন্টাল ভিউ অর্থোডন্টিকস অ্যান্ড ইমপ্লান্ট সেন্টারের চীফ কনসালট্যান্ট ডা. মো. ইমরান হোসেন। এ বিষয়ে তাহলে জেনে নেয়া যাক।

ইমপ্লান্ট-পরবর্তী প্রথম ২৪–৪৮ ঘণ্টা:
গরম খাবার বা পানীয় পরিহার করুন। ঠান্ডা, নরম খাবার খান যেমন দই, জেলো, আইসক্রিম। মুখ দিয়ে জোরে গার্গল করবেন না। বরফ দিয়ে মুখে হালকা চেপে ধরুন, এতে ফোলাভাব কমবে। ধূমপান ও অ্যালকোহল পানের অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করুন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন এবং মাথা উঁচু করে ঘুমান।

ওষুধ ও ব্যথা নিয়ন্ত্রণে করণীয়:
প্রথম কয়েক দিন সামান্য ব্যথা বা অস্বস্তি স্বাভাবিক। তবে চিকিৎসকের দেয়া ওষুধ যথাসময়ে খেতে হবে। ব্যথা বেড়ে গেলে বা রক্তপাত বন্ধ না হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

দাঁতের যত্ন ও মুখ পরিষ্কার রাখার নিয়ম:
ব্রাশিং শুরু: ইমপ্লান্ট করার পর প্রথম ২৪ ঘণ্টা ব্রাশ করবেন না। এরপর নরম ব্রাশ দিয়ে ধীরে ধীরে ব্রাশ শুরু করতে পারেন।

মাউথওয়াশ: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন। চেপে কুলকুচি না করে মুখে রেখে হালকা করে নাড়ান।

ইমপ্লান্ট এরিয়া পরিষ্কার: প্রতিদিন ইমপ্লান্ট এরিয়া পরিষ্কার রাখুন। ইনফেকশন এড়াতে বিশেষ যত্ন প্রয়োজন।

খাবার নিয়ন্ত্রণ ও ডায়েট পরামর্শ:
শক্ত খাবার যেমন বাদাম, খোলা মাছ, খাসির হাড় চিবানো এড়িয়ে চলুন। নরম ও পুষ্টিকর খাবার খান। যেমন স্যুপ, ওটস, কলা, ডিম ইত্যাদি। স্ট্র দিয়ে পানীয় পান এড়িয়ে চলুন। প্রচুর পানি পান করুন, তবে ধীরে ধীরে।

ইমপ্লান্টের পরে যা এড়ানো জরুরি:
ধূমপান:
 ধূমপান হচ্ছে ইমপ্লান্ট ব্যর্থতার অন্যতম কারণ। এ জন্য এটি অবশ্যই পরিহার করুন।

ঘন ঘন মুখ দিয়ে থুথু ফেলা: কিছুক্ষণ পরপর থুথু ফেলার কারণে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধাপ্রাপ্ত হয়।

ইমপ্লান্ট এরিয়া স্পর্শ নয়: আঙ্গুল বা জিভ দিয়ে ইমপ্লান্ট এরিয়া স্পর্শ করা যাবে না।

ওভারব্রাশিং: কখনোই ওভারব্রাশিং করা যাবে না। এতে দাঁতের মাড়িতে ক্ষতি হতে পারে।

পরবর্তী পর্যায়ে নিয়মিত চেকআপের গুরুত্ব:
ইমপ্লান্ট সফল হলেও সেটি কতদিন টিকবে তা নির্ভর করে রুটিন চেকআপ, পরিচর্যা এবং রোগীর অভ্যাসের ওপর। রোগীদের অন্তত ৬ মাসে একবার ফলোআপ নিতে এবং ডেন্টাল স্কেলিং করানোর পরামর্শ দেয়া হয়।

পরামর্শ:
মনে রাখবেন, ইমপ্লান্ট কোনো জাদুকরী সমাধান নয়, এটি একটি প্রযুক্তিনির্ভর প্রক্রিয়া। রোগীর সচেতনতা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং নিয়মিত ফলোআপ ইমপ্লান্টের দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করে। ডেন্টাল ইমপ্লান্ট এক দারুণ সমাধান হলেও সফল ফল পেতে চাইলে পরবর্তী পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং সময়মত ফলোআপ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে আপনি ইমপ্লান্টের পুরো সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন বহু বছর ধরে।

সর্বশেষ সংবাদ

ইউক্রেনের কারাগারে রাশিয়ার হামলা, যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের হুঙ্কার

ইউক্রেনের একটি কারাগারে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১৭ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এক...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ