spot_img

বড়কে মান্য করুন, বৃদ্ধকে সম্মান করুন

অবশ্যই পরুন

জন্ম ও জীবনের যে ধারাক্রম—সেখানে ছোট থেকে বড় হতে হয়। এটি মহান আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ তোমাদের দুর্বলরূপে সৃষ্টি করেন, অতঃপর দুর্বলতার পর তিনি শক্তি দান করেন, শক্তির পর আবার দেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং তিনিই সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।’ (সুরা: রুম, আয়াত: ৫৪)

‘বড় ও ছোট’র অনেক দিক আছে। সবচেয়ে প্রকাশ্য দিক হলো—বয়সের দিক থেকে বড়-ছোট। মহান আল্লাহ পৃথিবীতে কাউকে আগে পাঠান, কাউকে পরে। তাই বয়সের দিক থেকে কেউ বড়, কেউ ছোট। আবার শক্তি-সামর্থ্যের দিক থেকে কেউ বড়, কেউ ছোট। জ্ঞান ও মেধার দিক থেকে কেউ বড়, কেউ ছোট। পদ-পদবির দিক থেকে এবং ক্ষমতার দিক থেকে কেউ বড়, কেউ ছোট। ইসলামের চাওয়া-পাওয়া হলো বড়কে মান্য করা এবং বৃদ্ধকে সম্মান করা।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আমাদের ছোটকে দয়া করে না, আমাদের বড়র হক আদায় করে না সে আমাদের নয়।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৪৩)

বয়সের দিক থেকে বড় ব্যক্তিকে সম্মান করা মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহকে সম্মান করার একটি দাবি হলো, বৃদ্ধ মুসলিমকে সম্মান করা।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৮৪৩)

অনেক বৃদ্ধ মানুষ এমন আছেন, যারা শুধু বয়সে বড় নন, অভিজ্ঞতায় ও আমলে অন্যদের চেয়ে বহু গুণ এগিয়ে। তাদের অবশ্যই সম্মান করতে হবে।

হাদিসের কিতাবে একটি ঘটনা আছে। দুইজন সাহাবি ইন্তেকাল করেছেন। একজন শহীদ হয়েছেন। অপরজন এক বছর পর স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন। সাহাবায়ে কেরাম কোনো প্রসঙ্গে বলেন, যিনি শহীদ হয়েছেন তার মর্যাদা বেশি। মহানবী (সা.) এ কথা শুনে বললেন, তার এক বছরের নামাজ, রোজা, নেক-আমল, দান-খয়রাতের কোনো হিসাবই তোমরা করলে না!’ (আবু দাউদ, হাদিস: ২৫২৪)। এতে বোঝা যায়, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞতা ও আমল অনেক বেশি হয়। এমন মানুষকে অধিক সম্মান করা উচিত।

উত্তম আমলের সঙ্গে দীর্ঘ বয়স মানবজীবনের একটি উত্কৃষ্ট অধ্যায়। এটা যেমনিভাবে পরকালে ব্যক্তির সম্মান, মর্যাদাকে উঁচু করে, তেমনি দুনিয়ায়ও সবার শ্রদ্ধা ও মর্যাদার আসনে সমাসীন করে। আল্লাহর কাছে সেসব বৃদ্ধ সর্বাধিক মর্যাদাবান, যারা ইবাদত ও আমলের পথ ধরে বার্ধক্যে উপনীত হয়েছেন।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তির সংবাদ দেব না? তারা বলল, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি উত্তম যে দীর্ঘ আয়ু লাভ করে এবং সুন্দর আমল করে।’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ৭২১২, সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস: ৩০৪৩)

ইসলামের সৌন্দর্য হচ্ছে—কোনো সভা-সমিতি, অনুষ্ঠান ও মজলিসে বক্তব্য প্রদানের ক্ষেত্রে বড়দের আগে সুযোগ প্রদান করা। একবার তিন সাহাবি—আব্দুর রহমান বিন সাহাল, মুহাইয়্যাসাহ এবং খুয়াইসা ইবনে মাসুদ নবীজির দরবারে গেলেন। আবদুর রহমান বিন সাহাল প্রথমে কথা বলতে শুরু করলেন। নবীজি তাকে থামিয়ে বললেন—বড়কে আগে কথা বলতে দাও। (কারণ তিনি সবার ছোট ছিলেন) তিনি তখন চুপ হয়ে গেলেন। বাকি দুজন কথা বলা শুরু করলেন। (বুখারি, হাদিস: ৩১৭৩)।

ইমামতির ক্ষেত্রেও বয়সে বড় ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দিতে হবে—এটা ইসরামের বিধান। এক হাদিসে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যদি তারা হিজরতের দিক দিয়ে বরাবর হয় তাহলে যারা বয়সে বড় তারা ইমামতি করবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৬৭৩)

ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে, ছোটরা বড়দের আগে সালাম দেবে। সম্মানার্থে বড়দের আগে সালাম দেওয়ার কথা হাদিস শরিফে এসেছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) সালামের আদেশ করে বলেছেন, ছোটরা বড়দের সালাম দেবে। (বুখারি, হাদিস: ৬২৩১)। তাই বড়কে তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দেওয়া সবার অন্যতম কর্তব্য।

সর্বশেষ সংবাদ

ফিলিস্তিনের প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের সমর্থন অব্যাহত থাকবে, রাষ্ট্রদূতকে প্রধান উপদেষ্টা

ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ