spot_img

সাইয়ারা: কোল্ডপ্লে কেলেঙ্কারির ছায়ায় এক প্রেমগাঁথা গল্প

অবশ্যই পরুন

একটা সময় ছিল, যখন ভালোবাসা মানেই ছিল প্রতিশ্রুতি, অপেক্ষা, আত্মত্যাগ। কিন্তু আধুনিক দুনিয়ায়, সোশ্যাল মিডিয়ার ঘূর্ণিপাকে, ডেটিং অ্যাপের তড়িৎ সংযোগে, প্রেম যেন হারিয়ে গেছে। সেখানে এখন সম্পর্ক মানে অপশন, আবেগ মানে ইমোজি। প্রেম? এক ক্লিকেই শুরু, একঘণ্টায় শেষ।

ঠিক এমন সময়েই হঠাৎ যেন বৃষ্টি নামালো সাইয়ারা নামের এক সিনেমা।

কোল্ডপ্লে কেলেঙ্কারির ছায়ায় এক প্রেমগাঁথা

যেখানে সাম্প্রতিক কোল্ডপ্লে বিতর্কে এক বিবাহিত সিইও’র আচরণে সম্পর্ক নামের প্রতিষ্ঠানটাই প্রশ্নের মুখে, সেখানে সাইয়ারা আমাদের মনে করিয়ে দেয় ভালোবাসা এখনো বেঁচে আছে, যদি খুঁজে নিতে পারো।

ছবিটির মুক্তি নিয়ে ছিল না কোনো হাইপ, না কোনও চটকদার প্রচারণা। না ছিল মহাসমারোহে ট্রেলার লঞ্চ, না কোনও পিআর-নির্ভর হ্যান্ডশেক। নির্মাতারা যেন চুপিচুপি এক চিঠির মতো ছবিটিকে সিনেমা হলে নামিয়ে দিলেন। আর তারপর? বিশ্ব যেন একযোগে চুপ করে গেল, কাঁদতে শুরু করলো।

গল্পটি যত না নতুন, তার চেয়ে বেশি দরকারি

গল্পটি শুরু হয় এক বিষণ্ণ, রাগী সুরকার ছেলেকে নিয়ে। তার জীবন অন্ধকার, ঝড়ো, আর নিজের সৃষ্ট সুরের মধ্যেই সে পথ খোঁজে। সেই অন্ধকারে আলো হয়ে আসে অনীত পাড্ডা নামে এক মেয়ে, যার চোখে পৃথিবীর কোমলতা। যার চুপচাপ হাসি আর সহজ উপস্থিতি পর্দা জুড়ে এক নিঃশব্দ কবিতা রচনা করে।

তারা প্রেমে পড়ে। কিন্তু ঠিক যখন দর্শক সেই প্রেমের স্বপ্নে ডুবে যাচ্ছে, তখনই আসে হৃদয়বিদারক মোড়—অনীত পাড্ডা আলঝেইমারে আক্রান্ত।

ভালোবাসা মানে শুধু পাশে থাকা নয়, ভুলে যাওয়ার পরও মনে রাখা

আমরা এমন এক সময়ে আছি, যেখানে ‘ঘোস্টিং’ সম্পর্ক শেষ করার নাম। কিন্তু সাইয়ারার নায়ক আহান পান্ডে তার নায়িখা অনীত পাড্ডার পাশে থাকে। সে বিয়ে করে, প্রতিটি অভ্যাস মুখস্থ করে। সে ভালোবাসে, এমনকি তখনও যখন পাড্ডা তাকে চিনতেই পারে না। এই নিঃস্বার্থ ভালোবাসার প্রকাশ এতটাই দুর্লভ এখনকার দিনে, যে তা দেখলেই বুক কেঁপে ওঠে।

এটা সিনেমা নয়, এক আবেগের বিপ্লব। যেন পুরনো প্রেমপত্রের মতই সাদামাটা, কিন্তু সেই তুলনায় অনেক বেশি সত্য।

বিশ্ব যেন চোখের জলে ভিজে যাচ্ছে

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, সিনেমা হলে দর্শকরা অঝোরে কাঁদছেন। কেউ কেউ বলছেন, বহু বছর পর কোনো সিনেমা তাদের এমনভাবে ছুঁয়েছে। কেউ আবার বলেন, ‘এই সিনেমা দেখে আমি আমার মা-বাবার হাত ধরেছিলাম আবার।’ এমনও দেখা গেছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কেউ আইভি স্ট্যান্ড টেনে সিনেমা হলে এসেছেন ছবিটা দেখতে।

সাইয়ারা যেন শুধু প্রেম নয়, এক ধরণের মানসিক আরামও এনে দিচ্ছে মানুষকে।

সব প্রজন্মের হৃদয়ে একসাথে বাজছে প্রেমের সুর

সাইয়ারার সবচেয়ে অবাক করা দিক? প্রায় সব প্রজন্মই একযোগে এই গল্পে মোহিত। জেন জেড, যারা প্রেম মানেই মেমে ভাবেন, তারাও কাঁদছেন। বুমাররা ফিরে যাচ্ছেন নিজেদের যৌবনে। আর মিলেনিয়ালরা খুঁজে পাচ্ছেন হারিয়ে যাওয়া সেই একরত্তি বিশ্বাস—প্রেম সত্যিই সব জয় করতে পারে।

ভালোবাসা ফিরে এসেছে মৃদু হয়ে কিন্তু দৃঢ় কণ্ঠে

‘সাইয়ারা’ হয়তো নিখুঁত সিনেমা নয়। অভিনয় মাঝে মাঝে কাঁচা, সংলাপে অতিরিক্ত মেলোড্রামা। তবু এটিই আজকের সময়ে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় গল্প। এমন এক সময়ে, যখন সম্পর্ক মানেই সন্দেহ আর বিচ্ছেদ। ‘সাইয়ারা’ বলছে, ভালোবাসা মানে তো একে অপরকে মনে রাখা, এমনকি ভুলে যাওয়ার পরও।

সর্বশেষ সংবাদ

ম্যাকরনের সিদ্ধান্তের কোনো গুরুত্ব নেই: ট্রাম্প

গাজাকে স্বীকৃতি দেয়ার পক্ষে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাকরনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানালেন ম্যাকরন...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ