দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ১৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে আমাদের উদ্দেশ্য ছিল সকল রাজনৈতিক দলকে একত্র করে অতীতকে স্মরণ করা। সেই লক্ষ্যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলাম। এতে করে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ঐক্য আরও দৃশ্যমান হতো। কিন্তু এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই আমরা পরাজিত শক্তির নানা ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি।”
বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “রাজনৈতিক মতপার্থক্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকতেই পারে, তবে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য, তা আরও প্রকাশ্য ও কার্যকরভাবে দেখানো এখন অত্যন্ত জরুরি। তা না হলে তারা এটিকে সুযোগ হিসেবে নিচ্ছে।”
বৈঠকে উপস্থিত রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতারা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতি একমত প্রকাশ করে বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক ও গণঐক্য অটুট রাখা এখন সময়ের দাবি। তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার গৃহীত উদ্যোগের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান। নেতারা আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এবং দেশব্যাপী ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে নিয়মিতভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সর্বদলীয় সভা আয়োজনের আহ্বান জানান।
বৈঠকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সৈয়দ হাসিবউদ্দিন হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির মজিবুর রহমান, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির রেদোয়ান আহমেদ, খেলাফত মজলিসের আহমদ আবদুল কাদের, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির তানিয়া রব, ১২ দলীয় জোটের শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির রুহিন হোসেন প্রিন্স এবং গণফোরামের মিজানুর রহমান অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে মঙ্গলবার রাতে প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি এবং ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে পৃথক একটি বৈঠক করেন। সেখানেও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নির্বাচনকালীন প্রস্তুতি এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য রক্ষার বিষয়ে আলোচনা হয়।