দেশের আমদানিনির্ভর খাদ্যশস্য গমের চাহিদা মেটানো এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক সুবিধা বজায় রাখতে সরকার দ্রুত ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। সরকার-টু-সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি মেট্রিক টন গম ৩০২ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার দরে কেনা হবে।
এতে মোট ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন গম কিনতে ব্যয় হবে ৮১৭ কোটি ৫৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, যা দেশি মুদ্রায় প্রতি কেজি ৩৭ টাকা ২০ পয়সা পড়বে। খাদ্য মন্ত্রণালয় এই প্রস্তাবটি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির পরবর্তী সভায় উত্থাপনের জন্য পাঠিয়েছে, যা আজ বুধবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম কেনার কারণ ব্যাখ্যা করে খাদ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৩০ জুন বাণিজ্য সচিবের পক্ষ থেকে খাদ্য সচিব বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয় যে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশি পণ্যের ওপর বিদ্যমান ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করলে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। উল্লেখ্য, চলতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্র শুল্কের পরিমাণ ৩৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে অধিক পণ্য আমদানি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
খাদ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েটস (ইউএসডব্লিউএ) হলো যুক্তরাষ্ট্রের গমশিল্পের প্রতিনিধিত্বকারী সরকারি রপ্তানি বাজার উন্নয়ন সংস্থা এবং ইউএসডিএর সহযোগী অংশীদার। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার উদ্দেশ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় এই গম আমদানি করবে। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৬ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির জন্য বাজেটে অর্থ সংস্থান রাখা হয়েছে। মন্ত্রণালয় প্রতি বছর জিটুজি পদ্ধতি এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে গম সংগ্রহ করছে। এরই অংশ হিসেবে এই প্রথমবার জিটুজি পদ্ধতিতে আগামী পাঁচ বছরে মোট ৭ লাখ টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দুই কার্গো এলএনজি আমদানি: দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে স্পট মার্কেট থেকে পৃথক দুটি আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে দুই কার্গো এলএনজি আমদানি করবে সরকার। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৫ কোটি ৭৩ লাখ ৬ হাজার ৮৪৭ টাকা।
১ লাখ ৪০ হাজার টন সার কেনা হবে: দেশের আমন মৌসুমের ফসল উৎপাদনে সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে ১ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের সার আমদানি করবে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। চারটি পৃথক প্রস্তাবের আওতায় এসব সার আমদানিতে ৮৯২ কোটি ৪৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ব্যয় হবে।