সহনশীলতা এক ধরনের মানবিক গুণ, যা মানুষকে শান্তিপূর্ণভাবে মিলেমিশে চলতে শেখায়। এটি সমাজে ভালোবাসা, সম্মান ও পারস্পরিক বোঝাপড়া গড়ে তোলে। ফলে শত্রুও এক সময় বন্ধুতে পরিণত হয়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের সহনশীল হওয়ার নির্দেশ করেছেন। কারো কাছ অপ্রত্যাশিত আচরণের শিকার হলে, মন্দের জবাবে মন্দ না করে ভালো করার নির্দেশ দিয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘উত্কৃষ্ট দ্বারা মন্দ প্রতিহত কর; তাহলে যাদের সঙ্গে তোমার শত্রুতা আছে, সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মতো।’ (সুরা : হা-মীম সিজদা, আয়াত : ৩৪)
আর যারা সহনশীল আচরণ করে, মানুষকে গুরুত্ব দেয়, সদাচরণ করে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতের সুসংবাদ। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের জানিয়ে দিবো না, কোনো ব্যক্তির জন্য জাহান্নাম হারাম এবং জাহান্নামের জন্য কোনো ব্যক্তি হারাম? যে ব্যক্তি মানুষের কাছাকাছি (জনপ্রিয়), সহজ-সরল, নম্রভাষী ও সদাচারী।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৪৮৮)
অনেক সময় সহনশীল থাকার কারণে মানুষকে অন্যদের দ্বারা আক্রান্ত হতে হয়। সহনশীলতার সুযোগ নিয়ে অনেকেই তাদের কষ্ট দেয়, ঠকায়। এর বিনিময়ে মহান আল্লাহ তাদের মর্যাদা আরো বৃদ্ধি করে দেন, তাদের সহযোগিতায় ফিরিশতা নিয়োজিত করে দেন।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আমার আত্মীয়-স্বজন আছেন। আমি তাদের সাথে সদাচরণ করি; কিন্তু তারা আমাকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে। আমি তাদের উপকার করে থাকি; কিন্তু তারা আমার অপকার করে। আমি তাদের সহনশীলতা প্রদর্শন করে থাকি আর তারা আমার সঙ্গে মূর্খসুলভ আচরণ করে। তখন তিনি বলেন, তুমি যা বললে, তাহলে যদি প্রকৃত অবস্থা তাই হয় তুমি যেন তাদের উপর জ্বলন্ত অঙ্গার নিক্ষেপ করছ। আর সর্বদা তোমার সঙ্গে আল্লাহর তরফ থেকে তাদের বিপক্ষে একজন সাহায্যকারী (ফেরেশতা) থাকবে, যতক্ষণ তুমি এ অবস্থায় বহাল থাকবে। (মুসলিম, হাদিস : ৬৪১৯)
সুবহানাল্লাহ, যারা আল্লাহর জন্য নম্রতা অবলম্বন করে, সহনশীল হয় মহান আল্লাহ তাদেরকে এভাবেই সাহায্য করেন। আল্লাহর ওপর ভরসা করে নীতির ওপর থাকা মুমিনদের হারানোর কিছুই নেই। তাদের সব অবস্থাই তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে।