spot_img

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন: আবারও লড়াইয়ে অ্যান্ড্রু কুমো, সমর্থনে ইসরায়েলপন্থিরা

অবশ্যই পরুন

যৌন হয়রানির অভিযোগের মুখে পড়ে  এক দশক ধরে নিউইয়র্কের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করা অ্যান্ড্রু কুমো পদত্যাগ করেন ২০২১ সালে। এই নেতার বিরুদ্ধে তখন নিউইয়র্কের নার্সিংহোমগুলোতে কোভিড-১৯-এ মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ কম দেখানোর অভিযোগ ওঠে।

এবার নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনের লড়াইয়ে করতে চলেছেন অ্যান্ড্রু কুমো। গেল মাসে নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের প্রাইমারিতে তিনি করুণভাবে পরাজিত হন। বিজয়ী হন রাজনীতিতে নবাগত, নিজেকে ‘ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট’ পরিচয় দেয়া জোহরান মামদানি। রাজনৈতিক পরিবার থেকে আসা কুমো মনে করেছিলেন, এ প্রার্থিতা তার জন্য সহজলভ্য হবে। সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে।

দেড় মিনিটের একটি ভিডিওতে ৬৭ বছর বয়সী কুমোকে নিউইয়র্কের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে মানুষের সঙ্গে করমর্দন করছেন তিনি। ভিডিওটি অনেকটাই ৩৩ বছর বয়সী মামদানির সফল প্রচার কৌশলের মতো করেই নির্মিত।

প্রতিদ্বন্দ্বীকে (মামদানি) আটকাতে পারবেন না, এমন আঁচ করতে পেরে ভোটের (ডেমোক্র্যাট প্রাইমারি) আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার আগেই কুমো হার স্বীকার করে নেন। কিন্তু গত সোমবার আবারও নির্বাচনী লড়াইয়ে ফেরেন তিনি, এবার একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। তিনি জানিয়েছেন, এবার জয়ের লক্ষ্যেই নেমেছেন।

কুমো বলেন, ‘আমার প্রতিদ্বন্দ্বী ‘‘মনদানি’’ চটকদার স্লোগান দিচ্ছেন, কিন্তু কার্যকর কোনো সমাধান নেই।’ প্রসঙ্গত, প্রাইমারি বিতর্কে তিনি মামদানির নাম বারবার ভুল উচ্চারণ করেছিলেন, এবারও একই কাজ করেন।

কুমো আরও বলেন, ‘আপনারা এমন একজন মেয়র পাওয়ার যোগ্য, যার নিউইয়র্ককে সাশ্রয়ী করে তোলার জন্য অভিজ্ঞতা ও বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা আছে।’ এ কথা বলে কুমো মামদানির মূল নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি তার (মামদানি) রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার ঘাটতির দিকেও ইঙ্গিত করেন।

অ্যান্ড্রু কুমো আরও বলেন, ‘একটি অধিকতর ন্যায্য, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী নিউইয়র্কের জন্য আমি আমার পরিকল্পনা যথেষ্ট আগ্রাসীভাবে তুলে ধরতে পারিনি। মামদানির অবাস্তব প্রস্তাব আর বিভাজনমূলক এজেন্ডা খণ্ডনেও আমি ব্যর্থ ছিলাম। তবে এবার সেই ভুল আর করব না, এ কথা আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’

ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ ও ইসরায়েলপন্থী সমর্থন

কুমোর পেছনে ডেমোক্রেটিক দলের পুরোনো ও প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্বের সমর্থন ছিল। তাদের মধ্যে ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন এবং সিনেটের সংখ্যালঘু নেতা ও নিউইয়র্কের সিনেটর চাক শুমার। তারা কুমোর পরাজয়ের পর মামদানিকে অভিনন্দন জানান। কিন্তু নিউইয়র্কের মেয়র প্রার্থী হিসেবে দলের মনোনয়ন পাওয়ার পর তাকে (মামদানি) সমর্থন দিতে অস্বীকৃতি জানান।

এ সিদ্ধান্তের পেছনে বড় কারণ ছিল মামদানির স্পষ্ট ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থান। তিনি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি আন্দোলনের সমর্থক এবং সবার সমানাধিকারের পাশাপাশি এক রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে মত দেন। শুধু নিউইয়র্ক সিটিতেই ১০ লাখের বেশি ইহুদি বাস করেন। এটি ইসরায়েল ছাড়া যেকোনো শহরের চেয়ে বেশি। তাদের অনেকে মার্কিন-ইসরায়েল দ্বৈত নাগরিক।

মামদানির বিপরীতে অ্যান্ড্রু কুমো বরাবরই নিজেকে ইসরায়েলপন্থি হিসেবে তুলে ধরেছেন। মামদানির প্রচারশিবির অভিযোগ করেছে, কুমোর প্রচারাভিযান ইসলামবিদ্বেষমূলক ছিল। নিউইয়র্কের নগর হিসাবরক্ষক ও শহরটির সর্বোচ্চ পদে থাকা ইহুদি কর্মকর্তা ব্র্যাড ল্যান্ডারও নিজের ডেমোক্রেটিক দলের মেয়র পদপ্রার্থিতার পক্ষে প্রচার চালানোর সময় কুমোর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তোলেন।

সোমবার কুমোর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করে ল্যান্ডার লেখেন, ‘ভোট হয়তো আমার প্রত্যাশা অনুযায়ী যায়নি। কিন্তু অ্যান্ড্রু কুমোর মতো আমি না। আমি নিউইয়র্কবাসীদের কথা শুনতে পারি; যারা তাকে আগেই প্রত্যাখ্যান করেছেন।’

ডেমোক্রেটিক দলের মধ্যে কুমো বহুদিন ধরেই ইসরায়েলপন্থি গোষ্ঠীর পছন্দের প্রার্থী। তবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলার পর গাজা যুদ্ধ শুরুর প্রেক্ষাপটে, তিনি ইসরায়েলপন্থি অবস্থান আরও জোরদার করেন।

২০২৩ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) যখন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে, তখন কুমো তার পক্ষে আইনি সহায়তা দলে যোগ দেন। তখন কুমো বলেছিলেন, ‘আইসিসির পরোয়ানার বিরুদ্ধে নেতানিয়াহুর পক্ষে আইনি লড়াই করতে পেরে আমি গর্বিত। আর আমি গর্বিত, ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিতে পেরে।’

অন্যদিকে, মামদানি নির্বাচনী প্রচারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, নেতানিয়াহুকে নিউইয়র্ক এলে গ্রেপ্তার করা হবে।

প্রসঙ্গত, নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে নির্বাচন হবে আগামী ৪ নভেম্বর। নিউইয়র্কের বর্তমান মেয়র, বিতর্কিত সাবেক পুলিশ প্রধান এরিক অ্যাডামসও এবার নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। তার বিরুদ্ধে আগে তুরস্কের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তবে ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর সেই অভিযোগ খারিজ হয়ে যায়।

সূত্র : মিডল ইস্ট আই

সর্বশেষ সংবাদ

শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে টি টোয়েন্টি সিরিজ বাংলাদেশের

শ্রীলঙ্কা সফরে ওয়ানডে সিরিজে প্রথম ম্যাচ হেরে দ্বিতীয় ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচ হেরে শিরোপা হাতছাড়া করে টাইগাররা। টি-টোয়েন্টি সিরিজেও...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ