যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের সময় একটি স্টোর থেকে পণ্য চুরির অভিযোগে বিতর্কের মুখে পড়েছেন এক ভারতীয় নারী। প্রায় ১,৩০০ ডলার মূল্যের সামগ্রী চুরির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকা। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। বুধবার (১৬ জুলাই) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সফররত এক ভারতীয় নারীকে খুচরা বিক্রেতা চেইন ‘টার্গেট’-এর একটি স্টোর থেকে পণ্য চুরির অভিযোগে তদন্তের মুখোমুখি হতে হয়েছে। ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের ওই স্টোরে সাত ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরার পর দোকানের কর্মীরা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ জানায়, ওই নারী প্রায় ১,৩০০ ডলার, অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকার পণ্য চুরি করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের বডিক্যামেরা ফুটেজে এক টার্গেট কর্মী অভিযোগ করছেন, ‘এই নারী সাত ঘণ্টা ধরে দোকানে ঘুরছিলেন। তিনি জিনিস তুলছিলেন, ফোনে দেখছিলেন, এক শেলফ থেকে আরেক শেলফে যাচ্ছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত কোনও পেমেন্ট বা অর্থ পরিশোধ না করেই দোকানের পশ্চিম দিকের গেট দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।’
ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ওই নারী বিষয়টি মীমাংসা করতে চান এবং পণ্যগুলোর দাম পরিশোধের প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘আমি দুঃখিত যদি আপনাদের বিরক্ত করে থাকি। আমি এই দেশের মানুষ নই, এখানেই থাকব না।’
এরপর বিল যাচাই করে কাগজপত্র প্রক্রিয়ার জন্য পুলিশ তাকে হাতকড়া পরিয়ে স্টেশনে নিয়ে যায়। ভিডিওতে বলা হয়, ওই নারীর বিরুদ্ধে ফেলোনি (গুরুতর অপরাধ) অভিযোগ আনা হচ্ছে। যদিও তাকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়নি, তবে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে এই ঘটনার ভিডিও ইউটিউবে প্রকাশিত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। বিশেষ করে অভিবাসীদের আইন পালন, মার্কিন ভিসা ও অভিবাসন নীতির পরিণতি নিয়ে।
ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘চলতি বছরের ১ মে এক নারী দোকানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটিয়ে হাজার ডলারের পণ্য চুরি করে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশকে ডাকা হয়। এরপর যা ঘটে, সেটিই এই ভিডিওতে রয়েছে।’
আরেকজন বলেন, ‘ভাষা বা সংস্কৃতির কোনো বাধা এখানে ছিল না। সে জানত সে কী করছে।’
তৃতীয় একজন লেখেন, ‘আমি যুক্তরাজ্যে ৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে বৈধ অভিবাসী হিসেবে থেকেছি। সবসময় চেষ্টা করেছি আইন না ভাঙতে, স্থানীয়দের শ্রদ্ধা করতে। একজন অভিবাসী হিসেবে আপনি নিজের দেশ ও সংস্কৃতির প্রতিনিধি। এই নারী আসলে অপরাধী। সে সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করছে, যা হয়তো ভারতে কখনও কখনও কাজ করে। কিন্তু এখানে এমনটা হলে পার পাওয়া যাবে, এটা ধরে নেওয়া ভুল।’
আরও একজন লিখেছেন, ‘দেশকে আন্তর্জাতিক পরিসরে লজ্জায় ফেলেছে! ভুল কারণে শিরোনাম হয়েছে। বিদেশে দেশের নাম তুলে ধরুন, এমন অপমান নয়।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে আরও এক ভারতীয় শিক্ষার্থীকে চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়, যেটিও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।