পাকিস্তানে প্রতিরক্ষা দপ্তরের আবাসনের ভেতর থেকে উদ্ধার হয় মডেল ও অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের লাশ। এ ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে দেশটিতে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, অভিনেত্রীর মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৮-১০ মাস আগে। এমনকি তার শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পচে গিয়েছিল।
হুমাইরা আসগরের মৃত্যুতে বিষাদের ছায়া নেমেছে তার পরিবার ও অনুরাগীদের মাঝে। প্রশ্ন উঠেছে, কিভাবে এতদিন ধরে কেউ খোঁজ নেয়নি অভিনেত্রীর? পরিবার থেকেও তার সঙ্গে ছিল যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা। ফলে অনেকেই ভাবছেন, শুধু দুর্ঘটনা নয়, এর পেছনে হয়তো আছে অন্য কোনো রহস্য। তবে এসব আলোচনার মাঝেই প্রকাশ্যে এলো বন্ধুকে দেওয়া অভিনেত্রীর শেষ একটি বার্তা।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, হুমাইরার মৃত্যু নিয়ে রহস্যের মাঝেই হুমায়রার ঘনিষ্ঠ বন্ধু দুর এ শেহওয়ার সামাজিকমাধ্যমে শেয়ার করেছেন অভিনেত্রীর পাঠানো একটি শেষ ভয়েস মেসেজ, যা আরও আবেগতাড়িত করে তুলেছে নেটিজেনদের। সেই ভয়েস মেসেজে হুমাইরাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি দুঃখিত, আমি একটু ব্যস্ত ছিলাম। এখানে ওখানে ঘুরছিলাম। খুব ভালো লাগল শুনে যে তুমি এখন মক্কায় আছো।
আমার জন্য অনেক দোয়া করো প্লিজ। তোমার এই কিউটি বন্ধু বা বোনের জন্য মন থেকে দোয়া করবে। আমার ক্যারিয়ারের জন্যও দোয়া করো।’
এই মেসেজ থেকেই স্পষ্ট, মৃত্যুর আগে হয়তো কোনো মানসিক চাপ বা একাকীত্বে ভুগছিলেন তিনি। এদিকে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ভাড়া বাকি থাকায় ভবনের মালিক হুমায়রার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেন।
পরবর্তীতে পুলিশ এসে তালাবদ্ধ ফ্ল্যাট খুলে অভিনেত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে।
উল্লেখ্য, করাচিতে পাক প্রতিরক্ষা দফতরের আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন হুমাইরা। সেখান থেকেই ৮ জুলাই তার পচা-গলা দেহ উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল, ২০ দিন আগেই হুমাইরা মারা গিয়েছিলেন। তবে এরপর রিপোর্টে দাবি করা হয়, প্রায় ৯ মাস আগেই মৃত্যু হয়েছিল হুমাইরার। দীর্ঘদিন ধরে সেই বন্ধ ফ্ল্যাটেই তার মৃতদেহ পচছিল।
করাচির প্রতিরক্ষা দপ্তরের আবাসনের (ডিফেন্স হাউসিং অথরিটি) একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন হুমাইরা আসগর। অভিনেত্রীর মরদেহ উদ্ধারের পর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার বাবা মেয়ের লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানান। এমনকি তিনি তার মেয়ের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন বলেও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন। তবে শেষ পর্যন্ত হুমাইরার লাশ গ্রহণ করেছে পরিবার। গলফ নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, হুমাইরার ভাই নাভিদ আসগর লাহোর থেকে এসে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বোনের মরদেহ গ্রহণ করেন।