অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, শুধু ডিজিটালাইজেশন করেই আর্থিক খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে না। এর জন্য ব্যক্তিপর্যায়ে সৎ হওয়ার বিকল্প নেই। বুধবার (৯ জুলাই) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘অডিটর ও অ্যাকাউনটেন্ট’ সামিটে এ কথা বলেন তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের আর্থিক নীতি ভালোই ছিল। তবে তা গুটিকয়েক মানুষ নষ্ট করেছে। বিগত সরকারের আমলে অডিটরদের সাথে একীভূত হয়ে একটা পক্ষ নানা দুর্নীতি করেছে। এর দায় হিসাব নিরক্ষক ও নিরীক্ষা বিভাগ এড়াতে পারে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আর্থিক ব্যবস্থাপনা ধ্বংসে অডিটর ও নিরীক্ষকদের বড় অংশ ভূমিকা রেখেছে। বিনিয়োগ আকর্ষণে সবার আগে অ্যাকাউন্টিং সিস্টেমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় দেশি-বিদেশি সবাই পুঁজিবাজারের মতো সবখাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।
দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, এখন আর্থিক খাতে দুর্বল অডিট ব্যবস্থার প্রমাণ পাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সত্য উদ্ঘাটন ভালো উদ্যোগ। তবে গত ১৬ বছরে ব্যাংক খাতে যেভাবে লুট করা হয়েছে, তখন বাংলাদেশ ব্যাংক কি করেছিল? কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি নিজেদের অর্থের সুরক্ষাও করতে পারেনি। এ সময় ব্যাংকিং খাত ধ্বংসের দায় বিগত দিনের দায়িত্বশীলদের নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তী কান্ট্রি ডিরেক্টর সুলেমান কুলেবালি বলেন, নানা কারণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক চাপে পড়েছিল। তবে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই অবস্থায় সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্বস্তি ফিরবে বলে আশা করা যায়।
সম্মেলনে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি), দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) এবং দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস্ অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) সহ সব পেশাদার প্রতিষ্ঠান একই মন্ত্রণালয় দ্বারা পরিচালনার দাবিও তোলা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ বছরে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ব্যাংক খাত বিপর্যস্ত ছিল। শুধু ব্যাংকই নয় সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অভিনব কৌশলে লুটপাট হয়েছে। বিভ্রান্তিকর অডিট রিপোর্ট বানিয়ে এসব কাজের বৈধতা দেয়া হতো।