ডায়াবেটিসে পায়ের স্নায়ু (নার্ভ) এবং রক্তনালী উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। উচ্চ রক্তে শর্করার কারণে স্নায়ু এবং রক্তনালী উভয়ই ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা ‘ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি’ এবং ‘পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ’ (পিএডি) নামে পরিচিত অবস্থার সৃষ্টি করে। এর ফলে পায়ে অসাড়তা, ব্যথা, সংক্রমণের ঝুঁকি এবং আলসার বা ঘা হতে পারে।
ডায়াবেটিসে পায়ের স্নায়ু ও রক্তনালী কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তার বিস্তারিত বিবরণ নিচে দেওয়া হলো:
১. ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি: ডায়াবেটিস রোগীদের দীর্ঘকাল ধরে উচ্চ রক্তে শর্করার মাত্রা থাকলে, স্নায়ুগুলিতে রক্ত সরবরাহকারী ছোট রক্তনালীগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এর ফলে স্নায়ু ধীরে ধীরে সংবেদী ক্ষমতা হারায়, বিশেষ করে পায়ে। পায়ে অসাড়তা, ব্যথা, বা সুঁচ ফোঁটার মতো অনুভূতি হতে পারে। সংবেদনশীলতা কমে যাওয়ায়, পায়ে আঘাত বা ক্ষত হলেও রোগী তা বুঝতে পারে না, যা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
২. পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ (PAD): উচ্চ রক্তে শর্করার কারণে রক্তনালীগুলির ভেতরে ফ্যাট (ফ্যাটি প্লেক) জমা হতে শুরু করে, যা রক্তনালীগুলিকে সরু করে দেয়। বিশেষ করে পায়ে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালীগুলি সরু বা বন্ধ হয়ে গেলে, পায়ে পর্যাপ্ত রক্ত এবং অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। এর ফলে পায়ে ব্যথা, দুর্বলতা, ক্ষত এবং গ্যাংগ্রিন (টিস্যু মরা) হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। PAD এর কারণে পায়ে রক্ত সরবরাহ কমে যাওয়ায়, ছোটখাটো আঘাতও সহজে সারতে চায় না।
জটিলতা:
১. পায়ে ক্ষত বা আলসার, যা সহজে সারতে চায় না।
২. সংক্রমণ, যা সেপসিসের দিকেও যেতে পারে।
৩. অঙ্গচ্ছেদ (অ্যামপুটেশন) হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
৪. পায়ের বিকৃতি হতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিতভাবে তাদের পায়ের যত্ন নেওয়া উচিত এবং বছরে একবার অন্তত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত, যাতে এই সমস্যাগুলোর সমাধান সনাক্ত করা যায় এবং তাদের প্রতিরোধ করা যায়।