ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে টিকে থাকার লক্ষ্যে ইন্টার মিলান ও রিভারপ্লেট উভয়ের জন্যই ম্যাচটি ছিল বাঁচা-মরার। ফলে দুই মহাদেশীয় জায়ান্ট ক্লাবের মাঝে ‘ই’ গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচটি যে হাড্ডাহাড্ডি হবে তা অনুমেয়ই ছিল। উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচটিতে অবশ্য ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টারই শেষ হাসি হেসেছে। বিপরীতে ২-০ গোলে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত করা আর্জেন্টিনার রিভারপ্লেট বোনাস হিসেবে দেখেছে দুটি লাল কার্ড। ক্ষুব্ধ দর্শকরাও গ্যালারি থেকে নানা বস্তু ছুড়ে মেরেছেন।
আজ (বৃহস্পতিবার) ভোরে ওয়াশিংটনের লুমেন ফিল্ডে অনুষ্ঠিত ম্যাচে দুই দলের মাঠের পারফরম্যান্স ছাপিয়ে গেছে শেষ মুহূর্তের শারিরীক লড়াইয়ে। যা ম্যাচে দ্বিতীয় আর্জেন্টাইন ফুটবলারের লাল কার্ড নিশ্চিত করে। তিক্ত এই স্বাদ পেয়েছেন আলবিসেলেস্তে জাতীয় দলের তারকা গঞ্জালো মন্টিয়েল ও লুকাস মার্টিনেজ কুয়ার্তা। বিপরীতে স্বদেশি ক্লাবের বিদায় নিশ্চিতের পথে প্রাণবন্ত ছিলেন ইন্টারের আর্জেন্টাইন তারকা লাউতারো মার্টিনেজ। যদিও তিনি গোলের একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করেছেন।
ম্যাচের দুটি গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। প্রথমার্ধে গোলের সুযোগ তৈরি হলেও কোনো দলই স্কোরশিটে নাম তুলতে পারেনি। ম্যাচের ডেডলক ভাঙে ৭২ মিনিটে ইন্টারের ১৯ বছর বয়সী ফ্রান্সেসকো পিও এসপোসিতোর গোলে। এর আগপর্যন্ত রিভারপ্লেট দারুণ লড়াই চালিয়ে গেলেও সেই মুহূর্তে বড় ধাক্কা খায়। অবশ্য প্রথম গোল হওয়ার মিনিট সাতেক আগেই তারা দশজনের দলে পরিণত হয়েছিল। রিভারের প্রায় সবাইকে ছাড়িয়ে ডি-বক্সে প্রবেশের আগমুহূর্তে ইন্টারের একজনকে কড়া ট্যাকেল করে লাল কার্ড দেখেন ডিফেন্ডার লুকাস মার্টিনেজ।
এরপর ৯০ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে রিভারের কফিনে চূড়ান্ত পেরেক ঠোকেন নেরাজ্জি ডিফেন্ডার আলেসান্দ্রো বাস্তোনি। বক্সের কোণা থেকে তার বাঁ পায়ের মাটি কামড়ানো শট জালে জড়াতেই ইন্টারের পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করে। এক মিনিট বাদেই রিভারপ্লেট পরিণত হয় ৯ জনের দলে। এবার দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হলো মন্টিয়েলকে। এরপর রেফারি শেষ বাঁশি বাজাতেই মুখোমুখি অবস্থানে চলে যান দুই দলের ফুটবলাররা। যার শুরুটা হয় রিভারের মার্কোস আকুনা ও ইন্টারের ডেনজেল ডেফ্রিসের বাদানুবাদ দিয়ে, যা পরে দলীয় লড়াইয়ে পরিণত হয়।
এই হারে চলমান ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে আর্জেন্টিনার দুটি ক্লাবই বিদায় নিশ্চিত করল। বোকা জুনিয়র্স কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও, রিভারপ্লেট নকআউট রাউন্ডে ওঠার জোর সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু তারা আসর শেষ করছে ৩ ম্যাচে একটি জয়, ড্র ও হার নিয়ে। সবমিলিয়ে তাদের পয়েন্ট ৪। বিপরীতে ইন্টার মিলান ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ‘ই’ গ্রুপের শীর্ষে থেকেই নামবে নকআউট রাউন্ডে। এই গ্রুপ থেকে ওঠা আরেকটি দল সার্জিও রামোসের মন্টেরি। দুইয়ে থাকা দলটির পয়েন্ট ৫।
মাঠ ছাড়ার সময়ও ইন্টার-রিভারের খেলোয়াড়দের থামাতে নিরাপত্তা সদস্য ও ম্যাচ অফিসিয়ালদের হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। খেলোয়াড় টানেলের দিকে এই সময় গ্লাস, প্রতিকী ট্রফি ছুড়ে মেরে উত্তেজনা বাড়িয়েছেন দর্শকরাও। বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর ম্যাচে ইন্টার প্রতিপক্ষ হিসেবে পেল ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্সকে, তারা লড়বে ৩০ জুন। আরেক ম্যাচে সিএফ মন্টেরি লড়বে সিএফ মন্টেরির সঙ্গে।