ইসলামপূর্ব আরবে অনেক ধরনের কুসংস্কার ও অহেতুক বিশ্বাস প্রচলিত ছিল। রাসুলুল্লাহ (সা.) কোরআন-সুন্নাহর শিক্ষার মাধ্যমে সমাজ থেকে সব কুসংস্কার দূর করেন। আরবরা গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজে বের হওয়ার আগে পাখি ওড়াত, পাখিটি উড়ে ডান দিকে গেলে যাত্রা শুভ মনে করত, আর বাম দিকে গেলে অশুভ মনে করত। কারো বাড়িতে পেঁচা বসলে মনে করত গৃহবাসীদের নিকটতম কারো মৃতু্য হবে অথবা ঘর বিরান হয়ে যাবে। নবী করিম (সা.) বলেন, এসব কুলক্ষণের কোনো বাস্তবতা নেই।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৭০৭)
ইসলামী জ্ঞানের অভাবে আমাদের সমাজেও নানা কুসংস্কার ছড়িয়ে আছে। অনেক এলাকায়ই রাতকেন্দ্রিক কিছু অহেতুক বিশ্বাস প্রচলিত আছে। নিচে এর কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো, যেমন-
* রাতে নখ, চুল, দাঁড়ি, গোঁফ ইত্যাদি কাটতে নেই।
* রাতে আয়না দেখতে নেই।
* ঘরের ময়লাপানি রাতে বাইরে ফেললে সংসারে অমঙ্গল হয়।
* রাতে বাঁশ কাটা যাবে না।
* রাতে ফল পাড়া ও গাছের পাতা ছঁেড়া যাবে না।
* রাতে কাউকে সুই-সুতা দিতে নেই।
* রাতে কোনো কিছুর লেনদেন করা ভালো নয়।
* রাতের বেলা কালিজিরার ভর্তা খেলে মায়ের জানাজা পায় না।
* খালিঘরে সন্ধ্যাবাতি দিতে হয়, না হলে বিপদ আসে।
* রাতে কাক বা কুকুর ডাকলে বিপদ আসে।
* রাতে পেঁচার ডাককে বিপদ সংকেত মনে করে।
এ ছাড়া এলাকাভেদে আরো অনেক কুসংস্কারের প্রচলন রয়েছে। এসব মনগড়া কথা, ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই। একজন মুসলমানের কাজ হলো সব ধরনের কুসংস্কার বাদ দিয়ে সব ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলার ওপর দৃঢ় ইমান ও সুদৃঢ় আস্থা রাখবে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমার উম্মতের ৭০ হাজার লোক বিনা হিসাবেই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারা হবে এমন লোক, যারা ইসলামী শরিয়তে নিষদ্ধি ঝাড়-ফুঁকের আশ্রয় নেয় না, কোনো বস্তুর শুভ-অশুভ মানে না। একমাত্র মহান আল্লাহর ওপর ভরসা রাখে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭২)