সম্পর্ক আর সাহসের গল্প নিয়ে ২০১০ সালে মুক্তি পেয়েছিল এক ব্যতিক্রমী তেলুগু ছবি—‘বেদম’। পরিচালক রাধাকৃষ্ণ জাগারলামুড়ি, যিনি ‘কৃষ’ নামেই পরিচিত, তুলে এনেছিলেন পাঁচজন সাধারণ মানুষের এক অবিস্মরণীয় যাত্রা। সন্ত্রাসী হামলার পর হাসপাতালের করিডরে এসে যাদের জীবনের গল্প এক বিন্দুতে মিলে যায়। আল্লু অর্জুন, মাঞ্চু মনোজ, আনুশকা শেট্টি ও মনোজ বাজপেয়ীর মতো তারকাদের অভিনয়ে এই ছবি হয়ে উঠেছিল সময়ের সাহসী এক উপস্থাপন। তবে সিনেমার বিষয় যতটা গম্ভীর, তার প্রচার ছিল ঠিক ততটাই আলোড়ন জাগানো। বিশেষ করে আনুশকার একটি খোলামেলা পোস্টার—যা হয়ে উঠেছিল বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু, এবং পরিণত হয়েছিল একাধিক সড়ক দুর্ঘটনার অপ্রত্যাশিত সূত্রে।
তবে ছবির বিষয়বস্তু যতটাই গম্ভীর ছিল, তার প্রচার কিন্তু হয়েছিল একেবারে অন্য ঢঙে। আনুশকা শেট্টির এক পোস্টার, যেখানে তাকে একটি পাতলা শাড়িতে বোল্ড ও খোলামেলা ভঙ্গিমায় দেখা গিয়েছিল।
সেটিই পরবর্তীতে হয়ে ওঠে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। হায়দরাবাদের পাঞ্জাগুট্টা সার্কেলে লাগানো সেই বিলবোর্ড এতটাই ‘হিট’ হয়ে ওঠে যে, এক সপ্তাহের মধ্যে সেখানে ঘটে যায় প্রায় ৪০টি সড়ক দুর্ঘটনা!
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সিনেমার পরিচালক কৃষ বলেন, ‘আমরা ছবির প্রচারের জন্য আনুশকার একটি খোলামেলা পোস্টার বিলবোর্ড আকারে পঞ্জাগুট্টা সার্কেলে লাগিয়েছিলাম। লোকজন এতটাই মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছিলেন তা দেখে যে, একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছিল সেখানে। শেষমেশ পুলিশের কাছে আমাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে, এবং আমরা বাধ্য হই সেই হোর্ডিং নামিয়ে ফেলতে।’
ছবিতে আনুশকা শেট্টি অভিনয় করেছিলেন এক যৌনকর্মীর চরিত্রে। সেই সময় তেলুগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির এক নম্বর নায়িকা ছিলেন তিনি। তার সাহসী উপস্থিতি ও চরিত্র বর্ণনার ধরন তেলুগু মূলধারার ছবিতে খুব একটা দেখা যেত না। সে কারণেই হয়তো পোস্টার ঘিরে তৈরি হয় তুমুল হইচই।
২০১০ সালের ৪ জুন মুক্তি পায় ‘বেদম’। প্রথম সপ্তাহে মাত্র ১০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল এবং শেষমেশ ছবিটি প্রযোজনার খরচও তুলে আনতে পারেনি। তবুও, ছবিটি পাঁচটি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড এবং দু’টি নন্দী অ্যাওয়ার্ড জিতেছিল।