জার্মানি ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশ ইউক্রেনকে সরবরাহকৃত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার অভ্যন্তরে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত পশ্চিমা সামরিক নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
জার্মানি ও অন্যান্য পশ্চিমা মিত্র দেশ ইউক্রেনকে সরবরাহ করা দূরপাল্লার অস্ত্র রাশিয়ার অভ্যন্তরে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে। সোমবার (২৬ মে) বার্লিনে একটি ইউরোপীয় ফোরামে এই ঘোষণা দেন সদ্য দায়িত্ব নেওয়া জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মার্জ বলেন, “অস্ত্র ব্যবহারে আর কোনো ভূগোল বা পাল্লা-সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা নেই। ইউক্রেন এখন রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটিগুলোতেও পাল্টা হামলা চালাতে পারবে।”
এই ঘোষণা এমন সময় এলো যখন রাশিয়া কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করেছে। এসব হামলায় শিশুসহ অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সাবেক জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের বিরোধিতা সত্ত্বেও, নতুন চ্যান্সেলর মার্জ পশ্চিমা নীতিতে এই বড় পরিবর্তন আনলেন। তবে জার্মানির নিজস্ব টাউরাস ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনকে সরবরাহ করা হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে গত বছরের নভেম্বরেই ইউক্রেনকে এই ধরনের হামলার অনুমতি দিয়েছে। তবে রাশিয়া পূর্ব থেকেই হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে যে, যদি তাদের মাটিতে পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহার করা হয়, তাহলে তা ন্যাটোর সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই পদক্ষেপকে “অত্যন্ত বিপজ্জনক” বলে মন্তব্য করেছেন এবং বলেছেন, এটি রাজনৈতিক সমাধানের প্রচেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করবে।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আগামী বুধবার বার্লিন সফরে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে সিএনএন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ‘পুরোপুরি পাগল’ বলে মন্তব্য করেছেন, তবে জেলেনস্কির মন্তব্যকেও ‘সমস্যাজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
মার্কিন কংগ্রেসের একাধিক প্রভাবশালী সদস্য—সিনেটর চাক গ্রাসলি, লিন্ডসি গ্রাহাম, এবং কংগ্রেসম্যান ব্রায়ান ফিটজপ্যাট্রিক ও ডন বেকন—যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছেন।