গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ ঢুকতে না দেওয়াসহ ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার ইসরায়েলকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে জানিয়েছেন ডব্লিউএইচও প্রধান ট্রেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসিস। এছাড়াও তিনি আহ্বান জানিয়েছেন, গাজায় চলমান সংঘাত ও মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে দয়া দেখানোর জন্য।
জেনেভায় সংস্থাটির বার্ষিক সম্মেলনে বৃহস্পতিবার দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গণহত্যা ও ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। ইসরায়েলের নিজের স্বার্থেই এখন শান্তি প্রয়োজন।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তার বক্তব্যে ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানকে ‘ধ্বংসাত্মক ও আত্মঘাতী’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এই ধরনের যুদ্ধ কোনো পক্ষের জন্যই স্থায়ী সমাধান বয়ে আনতে পারে না। বরং এটি ইসরায়েলকেই দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
এসময় আধানম তার নিজের জীবনের যুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতা স্মরণ করে বলেন, আমি জানি যুদ্ধ কী। আমি অনুভব করতে পারছি গাজার মানুষের যন্ত্রণা। আমি এর গন্ধ পাচ্ছি, শব্দ শুনতে পাচ্ছি। এটা পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারের ফল।
তিনি বলেন, খাবার ও চিকিৎসা সরঞ্জামকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা কখনোই মানবিক নয়। এটি বন্ধ হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, গাজায় কী চলছে তা ভাবুন- মানুষকে পরিকল্পিতভাবে না খাইয়ে রাখা, চিকিৎসা বঞ্চিত রাখা-এগুলো সভ্যতার লজ্জা।
এদিকে টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদন অনুসারে, গাজার ওপর ইসরায়েলের আরোপিত সর্বাত্মক অবরোধের পর প্রথমবারের মতো বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ প্রায় ৯০টি ত্রাণবাহী ট্রাক বিতরণ শুরু করেছে। এই সরবরাহকে স্বাগত জানালেও গেব্রিয়াসুস জোর দেন রাজনৈতিক সমাধানের ওপর, যা ছাড়া শান্তি কখনোই টেকসই হবে না বলে তিনি মনে করেন।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গতকাল গাজায় মানবিক সহায়তা নিয়ে মুখ খুলেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউটিউবে তার এক ভিডিওবার্তায় তিনি দাবি করেন, গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়ানোর জন্য তার সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এরপরই টানা ১১ সপ্তাহের অবরোধের পর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করেছে মানবিক সহায়তা। বৃহস্পতিবার (২২ মে) জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাঠানো ১০৭টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজার দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের কেরেম শালোম ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করে।