অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়ার বিরুদ্ধে করা হত্যাচেষ্টা মামলার ঘটনাকালীন দেশের বাইরে (কানাডা) ছিলেন তিনি এবং তদন্তে সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার (২০ মে) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে নুসরাত ফারিয়ার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. বিল্লাল ভূঁইয়া এ তথ্য উপস্থাপন করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেফতারের পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এছাড়া আসামির পাসপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা গেছে— গত বছরের ৯ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত মামলার ঘটনাকালীন তিনি দেশের বাইরে (কানাডা) ছিলেন।
এখন পর্যন্ত তদন্তে উক্ত মামলার ঘটনায় আসামির সম্পৃক্ততা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। মামলার তদন্ত এখনও অব্যাহত রয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে, রাজধানীর ভাটারা থানায় দায়ের হওয়া হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতারের ২ দিনের মধ্যে জামিন পেয়েছেন অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া। আজ জামিন পান তিনি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক জানান, জামিনের কাগজ কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছালে আজই মুক্তি পাবেন এই চলচ্চিত্র শিল্পী।
তিনি যমুনা টেলিভিশনকে ফোনে আরও জানিয়েছে, ৫ হাজার টাকা বন্ড জমা দিতে হবে। আর পুলিশ রিপোর্ট দাখিল না করা পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে নুসরাত ফারিহার।
গতকাল সোমবার ঢাকাই সিনেমার এই অভিনেত্রীকে আদালতে তোলা হলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এই অভিনেত্রীকে গ্রেফতারের পরই সমালোচনা শুরু হয় বিভিন্ন মহল থেকে। অনেকেই এর যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। পুরো বিনোদন জগতের সবাই এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীও তার গ্রেফতার নিয়ে কথা বলেন। নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেফতারের সমালোচনা করেন এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ-ও।
এর আগে, গত রোববার (১৮ মে) সকালে থাইল্যান্ড যেতে শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে গেলে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটকে দেয়। পরে তাকে তুলে দেয়া হয় ভাটারা থানা পুলিশের কাছে। এরপর একই দিন বিকেলে নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেফতার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হয় মিন্টো রোডের গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে।
এই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। ফারিয়া ছাড়াও হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামি করা হয়েছে অপু বিশ্বাস, আশনা হাবিব ভাবনা ও অভিনেতা জায়েদ খানসহ ১৭ জনকে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের সংশ্লিষ্ট ২৮৩ জন ও অজ্ঞাতনামা তিন-চারশ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেছেন এনামুল হক নামের এ ব্যক্তি।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থ যোগানদাতা হিসেবে ওই মামলায় আসামি করা হয় নুসরাত ফারিয়াকে।