ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) আয়োজিত সব ইভেন্ট থেকে আপাতত নিজেদের সরিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।
আজ সোমবার (১৯ মে) দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিসিসিআই জানিয়েছে তারা আগামী মাসে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নারী ইমার্জিং এশিয়া কাপ এবং সেপ্টেম্বরের দ্বিবার্ষিক পুরুষ এশিয়া কাপ থেকে নাম প্রত্যাহার করছে।
বর্তমানে এসিসির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মোহসিন নাকভি।
বিসিসিআইয়ের এক সূত্র জানিয়েছে, ‘এসিসির যিনি প্রধান, তিনি একজন পাকিস্তানি মন্ত্রী। জাতির আবেগ এখন এমন যে, ভারতীয় দল এমন কাউন্সিলের টুর্নামেন্টে খেলতে পারে না। আমরা এসিসিকে মৌখিকভাবে জানিয়ে দিয়েছি, নারী ইমার্জিং এশিয়া কাপে অংশ নেব না। ভবিষ্যতে এসিসির অন্য কোনো ইভেন্টেও আমাদের অংশগ্রহণ আপাতত স্থগিত। আমরা ভারত সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।’
২০২৪ সালে সনি পিকচার্স নেটওয়ার্কস ইন্ডিয়া (এসপিএনআই) ১৭০ মিলিয়ন ডলারে আট বছরের জন্য এশিয়া কাপের সম্প্রচার স্বত্ব কিনে নিয়েছিল। যদি এবারের টুর্নামেন্ট না হয়, তবে সেই চুক্তিও পুনর্বিবেচনা করতে হবে। এসিসির পাঁচ পূর্ণ সদস্য — ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান—সম্প্রচার রাজস্বের ১৫ শতাংশ করে পায়, বাকি অংশ বিতরণ হয় সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে।
২০২৩ সালের এশিয়া কাপেও ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের ছায়া ছিল। পাকিস্তান টুর্নামেন্ট আয়োজক হলেও ভারত সীমান্ত পেরোতে অস্বীকৃতি জানায়। শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কায় ভারতের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হয়। সে বছর ফাইনালে পাকিস্তান পৌঁছাতে না পারলেও ভারত শিরোপা জিতে নেয় শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে।
একই রকম ঘটনা ঘটে ২০২৪ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। পাকিস্তানের আয়োজনে ভারত আবারও হাইব্রিড মডেলে খেলে, এবার ম্যাচগুলো হয় দুবাইয়ে। ভারত ফাইনালে উঠেই শুধু থামেনি, শিরোপাও জিতে নেয়। ফলে পাকিস্তান ফাইনাল হোস্ট করার সুযোগও হারায়।
উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালে উপমহাদেশে ক্রিকেট উন্নয়নের লক্ষ্যে এবং বিশ্ব ক্রিকেটে একটি শক্তিশালী এশীয় ব্লক গঠনের উদ্দেশ্যে গঠিত হয় এসিসি। এর আগে বিসিসিআই সচিব জয় শাহ এসিসির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন, পরে তিনি আইসিসির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।