মেয়েদের শরীরে লোম থাকতে পারে। কিন্তু তা মোটা হয়ে পুরুষের লোমের মতো মুখ, পিঠ, বুক এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় উঠলে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ধরনের লোমকেই হারসুটিজম বা অবাঞ্ছিত লোম বলে। মেয়েদের শরীরে পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরন বেড়ে যাওয়া এর অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশেজ্ঞরা। এ ছাড়া আরও যেসব কারণে মেয়েদের মুখে অবাঞ্ছিত লোম হতে পারে, সেগুলোর মধ্যে আছে, পিসিও এস বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম। এটি সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের হতে থাকে।
টিউমারের মতো এড্রেনাল গ্রন্থির কিছু রোগের কারণে বেশি পরিমাণে এড্রোজেন হরমোন নিঃসরণ হলে মেয়েদের শরীরে ছেলেদের মতো লোম গজাতে পারে। এ ছাড়া আরও কিছু বিরল রোগেও এমন হতে পারে।
কুসিং সিনড্রোম নামক রোগে শরীরের কর্টিসল হরমোন বেড়ে যায়। এতে এ রোগ হতে পারে। এ ছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বিভিন্ন রং ফরসাকারী ক্রিম অথবা ইনজেকশনের মতো স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ গ্রহণেও মুখে ও শরীরে অতিরিক্ত লোম গজাতে পারে। এই রোগের আরও একটি লক্ষণ হচ্ছে মুখ অথবা শরীর ফুলে যাওয়া, শরীরে লাল দাগ দেখা দেওয়া।
বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে অবাঞ্ছিত লোম উঠতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মিনক্সিডিল, ডানাজল, টেস্টোস্টেরন সেবন করলেও লোম গজাতে পারে। এ ছাড়া থাইরয়েড হরমোনের তারতম্য, প্রোলাক্টিন হরমোন বেশি থাকার কারণেও অবাঞ্ছিত লোম দেখা দিতে পারে মেয়েদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায়।
কাদের এ সমস্যা বেশি হয়
– যাদের এ রোগের পারিবারিক ইতিহাস আছে।
– যাদের ওজন বেশি, তাদের শরীরে ইনসুলিন কাজ করতে পারে না।
কোন ধরনের সমস্যা হতে পারে
– এর সঙ্গে যাদের পিসিওডি থাকে, তাদের পরবর্তী সময়ে গর্ভধারণে সমস্যা হতে পারে।
– অতিরিক্ত ওজন থাকলে পরে ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি থাকে।
প্রতিকার ও চিকিৎসা
অবাঞ্ছিত লোম সাধারণত প্রতিরোধ করা যায় না। তবে ওজন কমালে এটা হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
– যে কারণে অবাঞ্ছিত লোম হচ্ছে, তার চিকিৎসা করলে লোম স্থায়ীভাবে ওঠা বন্ধ হতে পারে।
– পুরুষ হরমোন নিঃসরণ বন্ধ করার জন্য বিশেষ কিছু ওষুধ দেওয়া হয়।
– লেজার প্রযুক্তিও সাময়িক মুক্তি দিতে পারে অবাঞ্ছিত লোম থেকে।