ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যর (সেভেন সিস্টার্স) সংযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে শিলং থেকে শিলচর পর্যন্ত ১৬৬.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের হাইওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল)। প্রকল্পটি মিজোরাম, ত্রিপুরা, মণিপুর এবং আসামের বরাক ভ্যালি অঞ্চলের সঙ্গে কলকাতার সমুদ্রবন্দরকে যুক্ত করবে। যা ভারতের ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির আওতায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে সহায়ক হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই হাইওয়ে প্রকল্পটি মায়ানমারের কালাদান মাল্টি-মোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের সঙ্গে সংযুক্ত হবে যা কলকাতা বন্দরকে সিত্তওয়ে বন্দর দিয়ে মিজোরামের জোরিনপুই সীমান্তের সঙ্গে যুক্ত করবে। এই সংযোগের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন সরাসরি সমুদ্রপথে হবে, যা বাংলাদেশে নির্ভরতা কমিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে।
শিলং-শিলচর হাইওয়ে প্রকল্পটি পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় ভূমি স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। ল্যান্ডস্লাইড প্রতিরোধে রক অ্যানকর, হাই-স্ট্রেংথ ওয়্যার মেশ প্যানেল এবং সুরক্ষা দেয়াল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া, স্লোপ মনিটরিংয়ের জন্য পিয়েজোমিটার, রেইন গেজ, ইনক্লিনোমিটার, স্যাটেলমেন্ট গেজ এবং জিওফোন ব্যবহার করা হবে।
এই প্রকল্পটি হাইব্রিড অ্যানুইটি মডেল (এইচএএম) অনুযায়ী বাস্তবায়িত হবে এবং এতে ১৯টি বড় সেতু, ১৫৩টি ছোট সেতু, ৩২৬টি কুলভার্ট, ২২টি আন্ডারপাস, ২৬টি ওভারপাস, ৮টি সীমিত উচ্চতার সাবওয়ে এবং ৩৪টি ভায়াডাক্ট অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রকল্পটি ২০৩০ সালের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই হাইওয়ে নির্মাণের মাধ্যমে শিলিগুড়ি করিডোরের উপর নির্ভরতা কমবে এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে ভারতের অন্যান্য অংশের সংযোগ উন্নত হবে, যা জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।