জমকালো আয়োজনে ৭৮তম কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হয়েছে মঙ্গলবার। আগামী ২৪ মে পর্যন্ত চলবে এই উৎসব। এবার শুরুর আগেই বিতর্কে শুরু হয় এবারের ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসব ঘিরে। কিন্তু তার আগে উৎসব কর্তৃপক্ষ লাল গালিচায় ‘নগ্নতা’ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন, যা বিশ্বব্যাপী চলচ্চিত্র জগতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে।
২৪টি সিঁড়ি এবং ৬০ মিটার দীর্ঘ লাল গালিচায় হাঁটার জন্য মুখিয়ে থাকেন চলচ্চিত্র জগতের তারকারা। সেই গালিচাই এবারে বিতর্কের কেন্দ্রে। কান উৎসব কর্তৃপক্ষ এবারের উৎসবের জন্য অতিথিদের জন্য একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে উৎসবে ‘নগ্ন’ পোশাকে প্রবেশ করা যাবে না। পাশাপাশি, লাল গালিচায় কোনও দীর্ঘ ফ্রিল যুক্ত পোশাক পরেও হাঁটা যাবে না।
উৎসব কর্তাদের দাবি, এই ধরনের পোশাক পরলে তা কর্তব্যরত কর্মীদের ভিড় সামলাতে বাধা সৃষ্টি করে! পাশাপাশি লুমিয়ের গ্র্যান্ড থিয়েটারে প্রবেশের জন্যও একাধিক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। পুরো বিষয়টির নেপথ্যে সাফাই হিসেবে উৎসবের ‘প্রাতিষ্ঠানিকতা’ এবং ‘ফরাসি আইন’কে উল্লেখ করেছেন কর্তারা।
অতীতে কানে বেলা হাদিদ, এলে ফ্যানিং, কেন্ডল জেনারের মতো তারকাদের পোশাকে ‘নগ্নতা’র আভাস লক্ষ করা গেছে। তা নিয়ে বিতর্কও হয়েছে বিস্তর। ২০২২ সালে উৎসবের লাল গালিচায় একজন নারী ইউক্রেনের সমর্থনে পোশাক খুলে নগ্ন হন, যা নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে। চলতি বছরেই গ্র্যামি পুরস্কার অনুষ্ঠানের লাল গালিচায় সাহসী পোশাকে হাঁটেন সঙ্গীতশিল্পী কাইনে ওয়েস্টের স্ত্রী বিয়াঙ্কা সেন্সরি। শিট ড্রেসে আলোকচিত্রীদের সামনে বিয়াঙ্কার নগ্নতাই প্রকাশ্যে আসে। তারপর থেকেই বিশ্বজুড়ে ‘রেড কার্পেট ন্যুডিটি’ চর্চায় রয়েছে।
কানের লাল গালিচায় বিধিনিষেধ:
১) উৎসবের লাল গালিচায় তারকারা সেলফি তুলতে পারবেন না।
২) প্রেক্ষাগৃহের ভিতরে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ।
৪) নারীরা তাদের ইচ্ছামতো পোশাক পরতে পারেন। কিন্তু চলতি বছরে সেখানে ‘নগ্নতা’ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি, অতিথিদের দীর্ঘ ফ্রিল যুক্ত কোনো পোশাক পরতে নিষেধ করা হয়েছে।
৫) লাল গালিচায় পোশাকের সঙ্গে মানানসই জুতো পরতে হবে। তবে খালি পায়ে হাঁটা নিষেধ!
৬) পোশাকের সঙ্গে আনুষঙ্গিক ফ্যাশনের (অ্যাকসেসরি) ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ নেই। তবে সঙ্গে কোনও টোট ব্যাগ বা বড় ব্যাগ নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশ নিষেধ।
এদিকে, উৎসব কর্তাদের নির্দেশিকা ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই ‘নগ্নতা’র সংজ্ঞা জানতে চেয়েছেন। সমাজমাধ্যমে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’ বলেও অনেকে কটাক্ষ করেছেন। কারও মতে, উৎসবের নিয়ম তৈরিই হয় ভাঙার জন্য। তাই শেষ পর্যন্ত লাল গালিচায় কী কী চমক অপেক্ষা করছে, তার উত্তর পাওয়া যাবে যথাসময়েই।