যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি জায়ান্ট এনভিডিয়া চীনের জন্য তাদের এআই চিপ এইচ২০-এর পরিবর্তিত, কম ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সংস্করণ বাজারে আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামী দুই মাসের মধ্যেই এই সংস্করণটি চীনের বাজারে আসবে, জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স, কোম্পানির ঘনিষ্ঠ তিনটি সূত্রের বরাতে।
চীনে উন্নত প্রযুক্তির চিপ রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কঠোর বিধিনিষেধের কারণে মূল এইচ২০ চিপটি এখন রপ্তানি লাইসেন্সের আওতাভুক্ত, ফলে চীনে সেটি বিক্রি করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে, বাজার ধরে রাখতে নতুন সংস্করণ আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনভিডিয়া।
সূত্র জানিয়েছে, পরিবর্তিত এই চিপে মূল সংস্করণের তুলনায় মেমোরি ও অন্যান্য কার্যক্ষমতা অনেকটাই কম থাকবে। তবে, ব্যবহারকারীরা চাইলে কাস্টম কনফিগারেশনের মাধ্যমে কিছুটা পারফরম্যান্স বাড়াতে পারবেন।
এ বিষয়ে এনভিডিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
চীনের বাজারে এনভিডিয়ার গুরুত্ব বোঝাতে গেল মাসে বেইজিং সফর করেন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী জেনসেন হুয়াং। সফরে তিনি চীনের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং দেশটির বাজারকে এনভিডিয়ার জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
২০২২ সাল থেকে চীনের কাছে উন্নত প্রযুক্তির চিপ রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তি হিসেবে জানিয়েছে, এসব চিপ সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে।
চীনের বাজারে এনভিডিয়ার অবস্থান কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা প্রতিফলিত হয় ২০২৩ সালের অক্টোবরের এইচ২০ চিপ লঞ্চ এবং এরপর আসা ব্যাপক অর্ডার থেকে। টেনসেন্ট, আলিবাবা ও বাইটড্যান্সের মতো চীনা টেক জায়ান্টগুলো এরই মধ্যে বড় পরিমাণে অর্ডার দিয়েছে। চীনা এআই স্টার্টআপ ‘ডিপসিক’-এর মতো প্রতিষ্ঠানের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সাশ্রয়ী চিপের প্রয়োজন আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে।
রয়টার্সের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত এইচ২০ চিপের অর্ডার এসেছে ১৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি। শুধু চীন থেকেই এনভিডিয়ার গত অর্থবছরে আয় হয়েছে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার, যা তাদের মোট বিক্রির ১৩ শতাংশ।
এনভিডিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ—দুই পক্ষই এখনও পর্যন্ত এই ইস্যুতে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।