মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের খালাস চেয়ে করা আপিল শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ২৭ মে এই আপিলের রায় ঘোষণা করবে আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে দ্বিতীয় দিনের মতো আপিল শুনানি শুরু হয়। অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির আদালতে আজহারের পক্ষে শুনানি করেন।
শুনানি শেষে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, এখন পর্যন্ত যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে তারা সংঘবদ্ধ অন্যায় অবিচারের শিকার হয়েছেন। আমরা আশা করি এটিএম আজহারুল ইসলাম বেকসুর খালাস পাবেন।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এই মামলার রায়ের রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মূল আপিল শুনানির অনুমতি দেয় আদালত। মানবতাবিরোধী অপরাধ সংক্রান্ত মামলাগুলোর মধ্যে এটি প্রথম, যেখানে রিভিউ আবেদন থেকে মূল আপিল শুনানির অনুমতি দেয়া হয়।
এরপর গত ৬ মে সকাল ১০টায় এটিএম আজহারের আপিল শুনানি শুরু হয়। এরপর পরবর্তী শুনানির জন্য আজকে দিন ধার্য করে আদালত। শুনানি শেষে ২৭ মে রায়ের দিন ধার্য করেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই রায় দেন। এরপর এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেন আজহার।
এর আগে, ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় রংপুর অঞ্চলে ১,২৫৬ জনকে হত্যা বা গণহত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক ও নির্যাতন এবং অসংখ্য বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগসহ ছয় ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। ট্রাইব্যুনাল পাঁচটি অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেন।
তবে জামায়াতে ইসলামী এ রায়কে ‘প্রহসনের রায়’ হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছে। ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আজহারকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়ে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। ওই সময় আপিল বিভাগে ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিল এবং ২,৩৪০ পৃষ্ঠার ডকুমেন্টস দাখিল করা হয়।