spot_img

‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র পরিবর্তে নতুন নাম প্রসঙ্গে ইউনেস্কো যা জানালো

অবশ্যই পরুন

‘মঙ্গল শোভাযাত্রার’ নাম পরিবর্তন করে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ রাখায় ইউনেস্কোর স্বীকৃতি ধরে রাখতে নতুন করে আবেদন ও অনুমোদনের প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

গত ১১ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। এরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়—কেউ সমর্থন করেছেন, কেউ এর বিরোধিতা করেছেন।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৬ সালে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা অন পহেলা বৈশাখ’ শিরোনামে এই আয়োজনটি ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পায়। ফলে নাম পরিবর্তনে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি কীভাবে প্রভাবিত হবে—এমন প্রশ্ন ওঠে। এই প্রেক্ষাপটে বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে ইউনেস্কোকে ইমেইল করে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়।

ইউনেস্কো তাদের উত্তরবার্তায় জানিয়েছে, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ‘জীবন্ত প্রকৃতি ও গতিশীলতা’র কারণে নাম পরিবর্তনের জন্য একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে, যার অংশ হিসেবে ‘ইনট্যাঞ্জিবল কালচারাল হেরিটেজ কমিটি’র অনুমোদন প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এমন কোনো আবেদন জমা পড়েনি বলেও জানায় সংস্থাটি।

ইউনেস্কোর দেওয়া বার্তায় আরও বলা হয়েছে, এ ধরনের ঐতিহ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায় ও অংশীজনদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের উপর যে প্রভাব পড়তে পারে তা বিবেচনায় নেওয়া জরুরি।

ইউনেস্কো বক্তব্যের সঙ্গে সুরক্ষা বিষয়ক একটি বার্তাও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, “উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে, অপরিমেয় সাংস্কৃতি ঐতিহ্যের সুরক্ষার জন্য ইউনেস্কোর সনদে, নির্দিষ্টভাবে এথিক্যাল প্রিন্সিপালস্ বা নৈতিক অবস্থান সংক্রান্ত নীতিমালায় জোর দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী এ ধরনের জীবন্ত ঐতিহ্য ও এর গতিশীলতার প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রাখতে হবে।”

সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায় ও অংশীজনদের যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে এর “প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি, সম্ভাব্য ও নির্দিষ্ট প্রভাব সম্পর্কে সতর্কতার সাথে মূল্যায়ন করতে হবে যেন ঐতিহ্য বা সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়ের কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,” যোগ করা হয়েছে ওই বার্তায়।

তবে, বাংলাদেশের মঙ্গল শোভাযাত্রার নামের সাম্পতিক পরিবর্তন এ ধরনের কোনো নীতিগত অবস্থানের পক্ষে বা বিপক্ষে গেছে কি না, সে ব্যাপারে ইউনেস্কো কোনো মন্তব্য করেনি।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সালে ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ নামে এই আয়োজনটি শুরু হয়। ১৯৯০ সাল থেকে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে পরিচিতি পায় এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা পহেলা বৈশাখের প্রধান আকর্ষণে রূপ নেয়। তবে, এটি নিয়ে ইসলামপন্থী বিভিন্ন সংগঠনের আপত্তি বরাবরই ছিল। তাদের দাবি, শোভাযাত্রার উপাদানগুলো হিন্দু সংস্কৃতির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

এবারও ‘মঙ্গল’ শব্দটি নিয়ে কিছু ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল আপত্তি তোলে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন, কোনো ধরনের চাপ বা হুমকির কারণে এই পরিবর্তন হয়নি। বরং বিতর্কমুক্ত একটি সংস্কৃতিক আবহ গড়ে তুলতে এবং সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেই নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ সংবাদ

ফ্যাসিবাদের বিচার ও প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়: জামায়াত আমির

প্রয়োজনীয় সংস্কার ও ফ্যাসিস্টদের বিচার— নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে এই দুটি শর্ত পূরণ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ