spot_img

দক্ষিণ এশিয়ায় আন্তঃদেশীয় যান চলাচল প্রটোকলের খসড়া চূড়ান্ত

অবশ্যই পরুন

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের (বিবিআইএন) মধ্যকার স্বাক্ষরিত মোটর ভেহিক্যালস অ্যাগ্রিমেন্ট (BBIN-MVA)। প্রায় এক দশক আগে স্বাক্ষরিত এই চুক্তির মাধ্যমে চার দেশ যাত্রী, ব্যক্তিগত এবং পণ্যবাহী যানবাহনের পারস্পরিক চলাচল নিশ্চিত করতে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রটোকল খসড়া চূড়ান্ত করেছে। এটি দক্ষিণ এশিয়ায় আন্তঃদেশীয় সড়কপথে চলাচলের জন্য প্রণীত প্রথম প্রটোকল।

২০১৫ সালের ১৫ জুন ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে বিবিআইএন মোটর ভেহিক্যালস অ্যাগ্রিমেন্টে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, ভারতের সড়ক ও নৌপরিবহনমন্ত্রী, নেপালের ভৌত অবকাঠামো ও পরিবহনমন্ত্রী এবং ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী।

চুক্তির মূল লক্ষ্য ছিল চার দেশের মধ্যে যাত্রী, ব্যক্তি ও পণ্যবাহী যানবাহনের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সংযুক্তি বৃদ্ধি। তবে, অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াগত জটিলতা এবং বিশেষ করে ভুটানের অভ্যন্তরীণ আপত্তির কারণে এতদিন এটির বাস্তবায়ন থমকে ছিল।

-ভুটান ব্যতীত বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল প্রটোকল অনুসারে আন্তঃদেশীয় যান চলাচলের অনুমতি দেবে।
-তিন শ্রেণির পণ্যবাহী যানবাহন—হালকা (৭,৫০০ কেজি পর্যন্ত), মাঝারি (৭,৫০০–১২,০০০ কেজি) ও ভারী (১২,০০০ কেজির বেশি) বাণিজ্যিক গাড়ি চলাচলের অনুমতি পাবে।
-ইলেকট্রনিক ট্র্যাকিং সিস্টেম ও যৌথ তথ্যভাণ্ডার: আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশগুলো ইলেকট্রনিক সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার-সমৃদ্ধ একটি যৌথ প্ল্যাটফর্ম চালু করবে, যাতে যানবাহনের চলাচল, সুরক্ষা এবং নজরদারি নিশ্চিত করা যায়।
-চালক ও সহকারীদের নাগরিকত্ব ও ডকুমেন্টেশন: স্বাক্ষরকারী দেশের নাগরিকদের ভিসাসহ বৈধ পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ক্রু আইডেনটিটি কার্ড থাকতে হবে।

ADB-এর সহায়তায় কয়েকটি পরীক্ষামূলক যাত্রা এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে:
-২০১৫: কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা (৬০০ কিমি) রুটে পণ্যবাহী ট্রায়াল রান
-২০১৬: ঢাকা-দিল্লি (১,৭৮০ কিমি) রুটে ট্রায়াল রান
-২০১৮: ঢাকা থেকে ভারত হয়ে কাঠমান্ডু পর্যন্ত যাত্রীবাহী বাস চলাচল

প্রস্তাবিত ট্রানজিট রুটসমূহ:
১. কাঠমান্ডু–ভৈরব–সুনৌলি–নয়াদিল্লি
২. কাঠমান্ডু–বীরগঞ্জ–রাক্সৌল–কলকাতা
৩. কাঠমান্ডু–কাঁকরভিটা–বাংলাবান্ধা–মোংলা/চট্টগ্রাম

এডিবির তৈরি করা এশিয়ান হাইওয়ে করিডর বিবিআইএন–এমভিএ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সংস্থাটি রুট-ভিত্তিক বিশ্লেষণ, সড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়ন, সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা চিহ্নিতকরণসহ নানামুখী গবেষণা সম্পন্ন করেছে।

এডিবি জানিয়েছে, নেপাল সরাসরি চারটি ভারতীয় বন্দর—কলকাতা, হলদিয়া, বিশাখাপত্তম এবং মুন্দ্রার সঙ্গে সংযুক্ত হবে, যা দেশটির বাণিজ্য সক্ষমতা বাড়াবে।

কিছু পর্যবেক্ষকের মতে, ভারতের বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে বিবিআইএন চুক্তির বাস্তবায়নে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তদুপরি, সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত সংস্থাগুলোর দুর্বল সমন্বয়ও একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

চুক্তির বাস্তবায়ন, তদারকি ও পর্যালোচনার জন্য:
-প্রতিটি দেশে জাতীয় স্থল পরিবহন সুবিধা কমিটি
-যৌথ স্থল পরিবহন সুবিধা কমিটি
-কাস্টমস উপ-গ্রুপ গঠন করা হবে, যাতে চুক্তি লঙ্ঘন প্রতিরোধ ও সমন্বয় কার্যক্রম পরিচালনা সহজ হয়। সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট, এডিবি

সর্বশেষ সংবাদ

তরুণদের আরও বেশি রাজনীতিতে অংশগ্রহণের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, রাজনীতিতে যোগ না দিলে তরুণরা নীতিনির্ধারণে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারবে না। তাই নিজেদের...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ