পয়লা বৈশাখে বাঙালি জাতিকে আলোর পথে মুক্তির পথযাত্রী হওয়ার আহ্বান জানাবে ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী প্রভাতি বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। এবার ছায়ানটের ৫৮তম বর্ষবরণের আয়োজনের মূলভাব নির্ধারণ করা হয়েছে— ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’।
আজ শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকার ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সম্মেলনের সূচনা ও সমাপ্তি হয় সম্মিলিত কণ্ঠে গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী, সহসভাপতি খায়রুল আনাম শাকিল, সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা, যুগ্ম সম্পাদক পার্থ তানভীর নভেদ এবং সদস্য জয়ন্ত রায়।
সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে লাইসা আহমদ বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে মানবতা ও মূল্যবোধের যে অবক্ষয় দেখা যাচ্ছে, তার মধ্যেও আমরা আলোর আশায় বাঙালি সংস্কৃতির পথে একত্রিত হতে চাই।’ তিনি জানান, এবারের আয়োজন সাজানো হয়েছে নতুন আলো, প্রকৃতি ও মানুষকে ভালোবাসার গান এবং আত্মবোধনের সুরবাণী দিয়ে।
অনুষ্ঠানে থাকবে ৯টি সম্মেলক গান, ১২টি একক গান এবং ৩টি পাঠ। অনুষ্ঠান শুরু হবে ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে রাগ ভৈরবীতে রাগালাপের মধ্য দিয়ে এবং শেষ হবে ছায়ানটের কথন পাঠে, যা উপস্থাপন করবেন ডা. সারওয়ার আলী।
ডা. সারওয়ার আলী বলেন, “সংগীতজ্ঞ সন্জীদা খাতুন আমাদের মধ্যে না থাকলেও তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ করে আমরা এই সাংস্কৃতিক যাত্রা এগিয়ে নিচ্ছি। এটাই তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা।”
তিনি আরও বলেন, “এই প্রভাতি অনুষ্ঠান নিছক এক দিনের আবেগ নয়, বরং বাঙালির জাতিসত্তা ও মানবিক মূল্যবোধের চর্চার এক সাংস্কৃতিক উপলক্ষ।”
পার্থ তানভীর নভেদ জানান, মঞ্চ প্রস্তুতির কাজ চলছে পুরোদমে এবং নিরাপত্তা নিয়ে তারা আশ্বস্ত। আশা করা হচ্ছে, নির্বিঘ্নেই অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
সংবাদ সম্মেলন শেষে শিল্পীরা পরিবেশন করেন “মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান” এবং “এই বাংলা রবি ঠাকুরের, এই বাংলা কবি নজরুলের”— এই দুইটি গান।
প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এই প্রভাতি অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারিত হবে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনে।