ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের মামলায় সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক ৭ ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিতরা হলেন— সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক জিএম মীর মহিদুর রহমান, সাবেক ডিজিএম মো. সফিজ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক ডিএমডি মো. মাইনুল হক, সাবেক এজিএম সাইফুল হাসান, সাবেক জিএম ননী গোপাল নাথ, সাবেক এজিএম মো. কামরুল হোসেন খান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হুমায়ুন কবির, খানজাহান আলী সোয়েটার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আ. জলিল শেখ, পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম ও পরিচালক মীর মো. শওকত আলী।
রায়ের আদেশে বলা হয়, ৭ ব্যাংক কর্মকর্তার তিন বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে।
অপর ৪ আসামির পৃথক দুই ধারায় ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৪০৬ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও এক কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৮ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এই অর্থ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশ দেন। এদিন জামিনে থাকা আসামি মহিদুর, সফিজ ও মাইনুল আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
তাদের উপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। তবে অপর ৮ আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
জানা গেছে, খান জাহান আলী সোয়েটার্স লি. এর তাজুল ইসলাম, আ. জলিল শেখ, রফিকুল ইসলাম এবং মীর মোহাম্মদ শওকত আলীকে সোনালী ব্যাংক হোটেল শেরাটন শাখা থেকে প্রি শিপমেন্ট ক্রেডিট বাবদ ১০টি এলসি/কনট্রাক্টর প্রদর্শন করে এর বিপরীতে ১৪টি পিসির মাধ্যমে ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ১৭ মে পর্যন্ত মঞ্জুরীকৃত পিএসসি লিমিট ৩০ লাখ টাকার বিপরীতে এক কোটি ৩৮ লাখ ৮৯ হাজার ৮৩ টাকা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ২৪ লাখ ১৩ হাজার ৪১৫ টাকা সমন্বয় করা হয়।
অবশিষ্ট এক কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৮ টাকা সমন্বয় করা হয় না। খান জাহান আলী সোয়েটার্স লি. এর কর্মকর্তারা ব্যাংক কর্মকর্তাদের অবৈধ সহযোগিতায় এই টাকা আত্মসাৎ করেন।
এ ঘটনায় দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ ভূঞা ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি রমনা মডেল থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৪ সালের ২২ মে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা কমিশনের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. নাজমুচ্ছাদাত। ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।