বঙ্গোপসাগর, ২৭ লাখ বর্গকিলোমিটারের বিশাল এই সমুদ্রপথের সুবিধা পাচ্ছে এই অঞ্চলের সাতটি দেশ যথাক্রমে বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড। শিল্প ও বাণিজ্যে এ সুবিধার সদ্ব্যবহারে ২৭ বছর আগে শুরু হয় বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল, টেকনিকাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক) যদিও এখন পর্যন্ত কেবল প্রতিশ্রুতি ছাড়া তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।
বিশ্ব বাণিজ্যে গ্লোবাল সাউথের উত্থানে সক্রিয় হতে চায় এ আঞ্চলিক জোট। আসছে শীর্ষ সম্মেলনে বাণিজ্য সম্ভাবনা বৃদ্ধির সুযোগ খুঁজবেন ৭ দেশের শীর্ষ নেতারা। সমঝোতা হতে পারে, বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল ও সমুদ্র পরিবহন নিয়ে। সংস্থাটির ভবিষ্যৎ নিয়েও কর্মপরিকল্পনা দেবেন বিশিষ্টজনদের একটি কমিটি।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস থাইল্যান্ডে বসতে যাওয়া এবারের বিমসটেকে সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন ৩ এপ্রিল।
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা জানি নf এটা (বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল ও সমুদ্র পরিবহন নিয়ে সমঝোতা) স্বাক্ষর করার মতো অবস্থায় থাকবে কি না। কিন্তু এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আমরা যদি শূন্য শুল্ক সুবিধা পরস্পরের মধ্যে পেতে পারি, সেটার সুযোগে আমরা যদি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারি। বিমসটেক মার্কেটে আমরা শূন্য শুল্ক সুবিধাটা নিয়ে পণ্য রফতানি করতে পারি।
বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিটিউটের সভাপতি এম হুমায়ুন কবীর বলেছেন, বিমসটেক আগামী কিছুদিন কীভাবে চলবে তার একটা দিক-নির্দেশনার ব্যাপার আছে। একটা ডিক্লারেশন থাকার কথা বলা হচ্ছে। এছাড়াও বিমসটেক কেমন চলছে, এসডিজি নিয়ে এই অঞ্চল কতটা অগ্রগতি করতে পেরেছে, কীভাবে পারস্পরিক বিশ্বাসযোগ্যতাটা বাড়ানো যায়, গ্লোবালাইজেশনের যে প্রক্রিয়াটা আছে, এটাকে কীভাবে আরও ইনক্লুসিভ করা যায়।
আঞ্চলিক রাজনৈতিক জোট হিসেবেও গুরুত্ব বাড়ছে বিমসটেকের। তাই বহুপাক্ষিক এই সম্মেলনের সাইডলাইনে দ্বিপাক্ষিক বেশ কিছু বৈঠক সেরে ফেলতে পারেন দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নেতারা। এমনকি মিয়ানমারের জান্তা সরকার প্রধানের সাথে প্রথমবারের মতো বৈঠক হতে পারে অনেক নেতার।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বললেন, সিঙ্গাপুরের সাথেও আমরা দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনা শুরু করেছি। সেটা ঠিক আছে। বিমসটেকের প্রধান কার্যালয় বাংলাদেশে অবস্থিত। তাই এখানে আমাদের একটা ন্যাচারাল এডভেন্টাজ থাকার কথা।
এম. হুমায়ুন কবীর বলেন, আস্থার জায়গাটা তৈরি হলে সম্পর্কটা স্বাভাবিক জায়গায় আসতে পারে এখানে। তারা ওখানে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করবে, আমি তা মনে করছি না। পারস্পরিকভাবে যদি তারা একে-অপরের ওপর আস্থা বোধ করেন, তাহলে সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে পারে বলে আমার ধারণা। আমাদের দিক থেকে তো আমরা উদ্যোগী হয়েই আছি।
উল্লেখ্য, ব্যাংকক বিমসটেক সম্মেলন শেষে ৪ এপ্রিল সংস্থাটির সভাপতির দায়িত্ব নেবে বাংলাদেশ। বিমসটেকে সীমাবদ্ধ না থেকে বাংলাদেশের সামনে এখন আসিয়ান অঞ্চলে সম্পর্ক জোরদারেরও হাতছানির কথা বলছেন বিশ্লেষকরা।