spot_img

ইস্তাম্বুলের মেয়র ইমামোগলুর গ্রেফতারের জেরে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

অবশ্যই পরুন

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী এবং ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর গ্রেফতারের প্রতিবাদে ইস্তাম্বুলের প্রধান পুলিশ সদর দফতরের কাছে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হাজারো জনগণ। বিরোধী দল এবং সরকারের সমালোচকরা এই গ্রেফতারকে তুর্কি গণতন্ত্রের জন্য একটি বড় আঘাত হিসেবে দেখছেন। এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (১৯ মার্চ) স্থানীয় সময় সকালে, প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) সদস্য একরেম ইমামোগলুকে দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তা করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। এই গ্রেফতারের পর থেকেই ইস্তাম্বুলে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। হাজারো মানুষ পুলিশ সদর দফতরের কাছে জড়ো হয়ে মেয়রের সমর্থনে এবং সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকে।

এক বিক্ষোভকারী বুলেন্ট গুলটেন বলেন, ‘তারা (রুলিং পার্টি) এখন ইমামোগলুর বিরুদ্ধে অত্যাচার করছে; যিনি ২০১৯ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে এরদোয়ানকে চারবার পরাজিত করেছেন জনগণের ইচ্ছায়’।

বুলেন্ট গুলটেন ২০১৯ এবং ২০২৪ সালের পৌর নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ওই সময় ইমামোগলুর রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) বেশিরভাগ বড় শহরে জয়লাভ করে এরদোয়ানের দলকে পরাজিত করে।

গুলটেন আরও বলেন, ‘আজ তুর্কি জাতি আবারও গণতন্ত্রের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবে। ইমামোগলু জনগণের চোখে আরও বড় হচ্ছেন এবং শক্তি অর্জন করছেন।

ইমামোগলুর গ্রেফতারের পর ইস্তাম্বুলের গভর্নর অফিস সব ধরনের গণজমায়েত নিষিদ্ধ করেন। তবে বিক্ষোভকারীরা এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মেয়রের সমর্থনে রাস্তায় নেমে আসেন। নিরাপত্তা বাহিনী পুলিশ সদর দফতরের সামনের রাস্তাগুলো ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দেয় এবং জলকামান ও রায়ট পুলিশ মোতায়েন করে।

পৌর কর্মকর্তা মুরাত সাপানকায়া বলেন, ‘আমরা মেয়রকে সমর্থন করতে এখানে এসেছি। তাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাই আমরা তাকে সমর্থন দিতে এখানে উপস্থিত হয়েছি।’

৫৪ বছর বয়সী ইমামোগলু গত কয়েক মাসে এরদোয়ান ও তার সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। যার ফলে তার বিরুদ্ধে একের পর এক আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বুধবার (১৯ মার্চ) গ্রেফতারের পূর্বে তিনি বলেন যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে হাল ছাড়বেন না এবং চাপের মুখে দাঁড়িয়ে থাকবেন।

আরেক বিক্ষোভকারী ইলমাজ আরসলান বলেন, ‘আমরা আসলে ধারণা করেছিলাম যে ইমামোগলু শীঘ্রই এমন একটি গ্রেফতার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবেন। আমরা সবাই এখানে রয়েছি যতক্ষণ না সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয় এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়।’

ইমামোগলুর গ্রেফতার তুরস্কের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। বিরোধী দল এবং সরকারের সমালোচকরা এই ঘটনাকে গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হামলা হিসেবে দেখছেন। এই বিক্ষোভ তুরস্কের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হতে পারে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সমালোচকরা যুক্তি দিচ্ছেন যে এই পদক্ষেপগুলি রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত, যা আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বিরোধী পক্ষের মতামত দমন এবং ক্ষমতা সংহত করার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ইমামোগলু বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) একজন বিশিষ্ট নেতা। প্রেসিডেন্ট এরদোগানের একজন কট্টর সমালোচকও তিনি। তার গ্রেফতারের বিরুদ্ধে বিরোধী সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন যে তুরস্ক বর্তমান প্রশাসনের অধীনে একটি ন্যায্য ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া আর সম্ভব নয়।

সর্বশেষ সংবাদ

ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর প্রস্তাব নিয়ে ব্রিটেনে বৈঠক ইউরোপের ২০টি দেশের, কী সিদ্ধান্ত হল?

গত মাসের ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির বাগ্‌যুদ্ধ এবং বৈঠক ভেস্তে...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ