আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি-২০২৫ এর অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন এখন ভারত! চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নবম আসরের শিরোপা নিজেদের ঘরে তুলে নিয়েছে মেন ইন ব্লু’রা। নিউজিল্যান্ডকে হতাশ করে ৬ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেটের জয় তুলে নেয় ভারত। এইবারের টুর্নামেন্টে কোনো ম্যাচ না হারার রেকর্ড গড়েছে রোহিত শর্মার বাহিনী।
এতে করে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হিসেবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা তৃতীয়বারের মতো নিজেদের ঘরে তুললো ভারত। যদিও বৃষ্টির কারণে ২০০২ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভাগাভাগি করে ভারত। সেসময় ভারতের অধিনায়ক ছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলী। এরপর ২০১৩ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে ইংল্যান্ডকে তাদের মাটিতে ৫ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা জেতে ভারত।
আজ রোববার (৯ মার্চ) সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করতে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে নেমে নিউজিল্যান্ডকে যেনো পাত্তাই দিলো না ভারত। টসভাগ্য এবারও রোহিত বাহিনীর সহায় হয়নি। এই টুর্নামেন্টে এক ম্যাচও টসে জিততে পারেনি ভারত। এদিকে কিউই অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। যদিও আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে নেমে কিউইরা ২৫১ রানেই গুটিয়ে যায়। কিউইদের হয়ে ড্যারিল মিচেল ১০১ বলে দলীয় সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন। অন্যদিকে ৪০ বলে ৫৩ রান করেন মাইকেল ব্রেসওয়েল।
২৫২ রানের লক্ষ্যটা মামুলি মনে হচ্ছিলো ভারতের জন্য। কারণ এখন পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টে খেলতে নেমে ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপ প্রত্যেক ম্যাচেই সফলভাবে লক্ষ্য তাড়া করতে পেরেছে।
শুরু থেকেই টি২০ ভঙ্গিমায় খেলছিলেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুভমন গিল। দলীয় ১০৫ রান পর্যন্ত বিনা উইকেটে এগোতে থাকা ভারত নিজেদের জয়ের রাস্তাটা সহজ করে ফেলে।
সেসময় মনে হচ্ছিলো যে ভারত হয়তো কোনো উইকেট না হারিয়েই এই লক্ষ্য পাড়ি দেবে। যদিও ভারতকে প্রথম ঝটকা দেন মাইকেল ব্রেসওয়েল।
গ্লেন ফিলিপসের এক অতি মানবীয় ক্যাচে ধরা দেন ৩১ রান করা শুভমন গিল। একই ওভারে বিরাট কোহলিকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফেরান ব্রেসওয়েল।
এদিকে অপর প্রান্তে থাকা রোহিত শর্মা ঠাণ্ডা মাথায় এগোতে থাকেন নিজের শতকের দিকে। যদিও ৭৬ রানেই তাকে আটকে দেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কিউই রাচিন রবীন্দ্র। সেসময় কিউই শিবিরে কিছুটা আশার আলো জ্বলতে থাকলেও শ্রেয়াস আইয়ার এবং অক্ষর প্যাটেলের ক্যামিও ইনিংস কিউইদের সেই সামান্য ভরসাকেও ভেঙে চুরমার করে দেন।
শ্রেয়াস আইয়ারকে সাজঘরে ফিরিয়ে ভারতের জন্য কিছুটা সমস্যা তৈরি করার সুযোগ থাকলেও তার সহজ ক্যাচটি মিস করে কিউই এক ফিল্ডার। এরপর আবার সুযোগ আসলে সেটি মিস করেননি রাচিন রবীন্দ্র। মিচেল স্যান্টনারের বলে ক্যাচ উঠিয়ে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ৬২ বলে ৪৮ রান করা শ্রেয়াস আইয়ার।
এরপর হার্দিক পান্ডিয়া এবং কেএল রাহুল মিলে ভারতকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেওয়ার ঠিক কিছু আগে পান্ডিয়া বড় শট খেলতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন। শেষদিকে একটা অবিশ্বাস্য কিছুরই হয়তো আশা করছিলো নিউজিল্যান্ড। ভারতকে চেপেও ধরেছিলো তারা।
৬ উইকেট হারিয়ে ভারতের যখন আর ৯ রান দরকার তখন ক্রিজে থাকা জাদেজা এবং রাহুল ঠাণ্ডা মাথায় স্ট্রাইক রোটেট করে ৬ বল বাকি থাকতেই ভারতের জয়টা নিশ্চিত করেন। উইনিং শটটা খেলেন রবীন্দ্র জাদেজা।
ভারতের হয়ে ৮৩ বলে দলীয় সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন রোহিত শর্মা। ৬২ বলে ৪৮ রান করেন শ্রেয়াস আইয়ার। কেএল রাহুল করেন ৩৪ বলে ৩৩ রান। অক্ষর প্যাটেলের ৪০ বলে ২৯ রানের ইনিংসটাও ভারতকে স্বস্তিদায়ক জায় গায় নিয়ে যায়। ভারতের হয়ে বরুণ চক্রবর্তী এবং কুলদীপ যাদব দুটি করে উইকেট শিকার করেন।
কিউইদের হয়ে মিচেল স্যান্টনার এবং মাইকেল ব্রেসওয়েল দুটি করে উইকেট শিকার করেন।
ফাইনালের ম্যাচসেরা হয়েছেন ৮৩ বলে ৭৬ রান করে ম্যাচের ভিত্তি গড়ে দেওয়া ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা।