spot_img

অধূমপায়ী নারীদের বাড়ছে ফুসফুসের ক্যানসার, কারণ জানালেন গবেষকেরা

অবশ্যই পরুন

ধূমপান না করা নারীদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসারের হার ক্রমাগত বাড়ছে। বিশেষ করে লাং অ্যাডিনোক্যান্সার নামে পরিচিত ধরনের ক্যানসার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যানসার বিষয়ক গবেষণা সংস্থা আইএআরসি-এর নতুন গবেষণায় এই উদ্বেগজনক তথ্য পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি দ্য ল্যানসেট রেসপিরেটরি মেডিসিন সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, যে ধরনের ফুসফুসের ক্যানসার সাধারণত অধূমপায়ীদের মধ্যে হয়, সেটি হলো—লাং অ্যাডিনোক্যানসার। অধূমপায়ী নারীদের ফুসফুসের ক্যানসারের প্রায় ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে এই ধরনের ক্যানসার দেখা যাচ্ছে। এটি পুরুষদের মধ্যে দেখা যায় ৪৫ শতাংশ ক্ষেত্রে।

২০২২ সালে সারা বিশ্বে ফুসফুস ক্যানসারের রোগী ছিলেন প্রায় ২৫ লাখ, যা ২০২০ সালের তুলনায় তিন লাখ বেশি। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবেশগত উপাদান, বিশেষত বায়ু দূষণের পাশাপাশি জিনগত পরিবর্তন এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া এই প্রবণতা বাড়াতে সাহায্য করেছে।

এই গবেষণায় অধূমপায়ী নারীদের ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাব্য কারণও তুলে ধরা হয়েছে। সেগুলো হলো:-

জেনেটিক মিউটেশন: অধূমপায়ী নারীদের ক্যানসার সৃষ্টির সবচেয়ে বড় কারণ হলো ইজিএফআর জিনের মিউটেশন বা পরিব্যক্তি। এই জিন কোষের বৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন তৈরি করে। যখন এই প্রোটিনের কোডে মিউটেশন ঘটে, তখন অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন শুরু হয়, যা ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষত এশিয়ার নারীদের ফুসফুস ক্যানসারের প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে ইজিএফআর জিনের মিউটেশন দেখা যাচ্ছে। তবে পশ্চিমা নারীদের মধ্যে এই হার ১৯ শতাংশ। আর অধূমপায়ী পুরুষদের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ২০ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, কোনো জীবের জিনোম তথা জেনেটিক বস্তুর গুণগত ও পরিমাণগত যেকোনো ধরনের আকস্মিক পরিবর্তনকে মিউটেশন বা পরিব্যক্তি বলে।

বায়ুদূষণ: সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো বলছে, বায়ুর মধ্যে থাকা সূক্ষ্ম কণা পিএম ২.৫ (এটি এমন সূক্ষ্ম কণা যা ২ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটার বা তার চেয়ে ছোট) কেআরএএস মিউটেশন ঘটাতে পারে। এছাড়া অনেক শহরে পিএম ২.৫ কণার পরিমাণ বাড়ছে, যা শুধু ফুসফুস ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং নারীদের অন্যান্য ধরনের ক্যানসারের জন্যও দায়ী।

হরমোনের পরিবর্তন: জেনেটিক প্রবণতার পাশাপাশি নারীদের মধ্যে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে হরমোনের পরিবর্তন। ইস্ট্রোজেন হরমোনের রিসেপ্টর ফুসফুসের কোষে থাকে এবং কিছু পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, ইস্ট্রোজেন টিউমারের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে পারে।

দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ: জীনগত এবং হরমোনের কারণে ছাড়াও অধূমপায়ী নারীদের ফুসফুসের ক্যানসার হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ। নারীদের মধ্যে পুরুষের তুলনায় অটোইমিউন রোগ (যেমন: রিউমাটয়েড আর্থরাইটিস, লুপাস ইত্যাদি) হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এই ধরনের রোগগুলো শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিকল করে দেয়, যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

এছাড়া জেনেটিক মিউটেশনের কারণে নারীরা প্রাকৃতিকভাবেই পুরুষদের তুলনায় বেশি ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। তবে, বায়ুদূষণ বেড়ে যাওয়া, হরমোন ক্ষরণ চক্রের পরিবর্তন, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় ত্রুটি এবং আয়ু বৃদ্ধি এই ঝুঁকিগুলো আরও বাড়িয়ে তুলছে।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, হিউম্যান প্যাপিলোমা (এইচপিভি) নামক একটি ভাইরাসও নারীদের ফুসফুসের ক্যানসারে ভূমিকা রাখতে পারে।

সর্বশেষ সংবাদ

২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা

২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা করেছে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ। তবে এদিন থাকবে না সরকারি ছুটি। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি)...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ