আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তেলেঙ্গানায় মুসলমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক ঘণ্টা আগে ছুটি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি। তেলেঙ্গানা সরকার এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনাও জারি করেছে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি।
এমনকি কেন হিন্দুদের উৎসবের সময় এই ধরনের সুবিধা দেওয়া হয় না, সেই প্রশ্নও তুলেছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী এই দলটি।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু ও বার্তাসংস্থা পিটিআই পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, তেলেঙ্গানা সরকার পবিত্র রমজান মাসে মুসলিম কর্মচারীদের এক ঘণ্টা আগে অফিস ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছে। এই পদক্ষেপের নিন্দা করেছে বিরোধী বিজেপি। দলটির প্রশ্ন— কেন হিন্দুদের উৎসবের সময় এই ধরনের সুবিধা দেওয়া হয় না।
একইসঙ্গে কট্টর হিন্দুত্ববাদী এই দলটি আসন্ন রমজান মাসকে সামনে রেখে নেওয়া এই পদক্ষেপটিকে ‘তুষ্টির রাজনীতি’ হিসাবে অভিহিত করেছে। তবে ক্ষমতাসীন দল বলেছে, রাজ্যে এই ধরনের পদক্ষেপ নতুন কিছু নয়।
সরকারি ওই বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, শিক্ষক, চুক্তিভিত্তিক ও আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগকৃত কর্মী, বোর্ড, কর্পোরেশন এবং সরকারি সেক্টরের কর্মচারীসহ সমস্ত মুসলিম কর্মচারীদের পবিত্র রমজান মাস চলাকালীন ২ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিবেল ৪ টায় অফিস ত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেই অনুমতি তারা পেয়ে যাবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।
‘তেলেঙ্গানা স্টেট মাইনরিটি এমপ্লয়িজ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন’-এর আবেদনের প্রেক্ষিতেই আগামী ২ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চালু থাকবে বলে জানানো হয় সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে। যে মুসলিম কর্মীরা এই সুযোগ নিতে ইচ্ছুক, তাদের এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা প্রতিষ্ঠানে আবেদন জানানোর কথা বলেছে রাজ্যটির ক্ষমতাসীন রেবন্ত সরকার।
তবে তেলেঙ্গানার বিরোধী দল বিজেপির মঙ্গলবার অভিযোগ তুলেছে, রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত ভোটব্যাংকের লক্ষ্যে মুসলিম তোষণের রাজনীতি শুরু করেছেন। দলের আইটি সেলের সর্বভারতীয় নেতা অমিত মালব্যের প্রশ্ন— নবরাত্রির উপবাসের সময় হিন্দু কর্মচারীরা কেন আগে ছুটি পান না?
তবে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস নেতা এবং সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক উপদেষ্টা মোহাম্মদ আলী শাব্বির বলেছেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তে নতুন কিছু নেই। পিটিআইকে তিনি বলেছেন, এই সুবিধা দেওয়া হয়েছিল বিআরএস শাসনামলে। অনেক রাজ্যে বিজেপি সরকারও দিচ্ছে। শুধু তেলেঙ্গানায় নয় এবং এই বছরও নয়। বেশ কয়েক বছর ধরেই এটা আছে। এক ঘণ্টার সুবিধা দেওয়া হয়।