spot_img

শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের টিস্যুর মতো ব্যবহার করেছে : সারজিস আলম

অবশ্যই পরুন

‘শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের টিস্যুর মতো ব্যবহার করেছে’ উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘তৃণমূলদের বিচারের মুখোমুখি রেখে সে পালিয়েছে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ মাঠ পর্যায়ে যারা নেতাকর্মী রয়েছেন এ থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত। কার পেছনে রাজনীতি করেছেন বা করবেন।’

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়েল রির্সোর্টে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা নিজেকে বাঁচানোর জন্য দেশ থেকে লেজ গুটিয়ে পালিয়ে গেছে। স্বজনদের সেইভ এক্সিট দিয়েছে। নিজে বাঁচার জন্যে ও পরিবারকে বাঁচানোর জন্যে পালালেও হাসিনা নেতাকর্মীদের নিয়ে যাননি। দলীয় তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের চিন্তা করেননি।’

নেতাকর্মীদের এখন চেনার সুযোগ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বিদেশে এসি রুমে বসে মোদিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন। দেশের বাইরে বসে নেতাকর্মীদের উস্কানি দিচ্ছেন। তারা তার কথা শুনে বিপদে পড়ছেন।’

জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সোনারগাঁও উপজেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য তুহিন মাহমুদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সোনারগাঁওয়ের সংগঠক শাকিল সাইফুল্লাহ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত শাকিল আহম্মেদ, শহীদ মেহেদী হাসানের বাবা সানাউল্লাহ ও শহীদ ইমরান হোসেনের মা কোহিনুর আক্তার।

‘আমাদের রাজনৈতিক দল এ ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে আসছে’ জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘অভ্যূত্থানের অন্যতম সমন্বয়ক আমাদের রাজপথের সহযোদ্ধা নাহিদ ইসলাম যিনি এ অভ্যূত্থানের ঘোষক, তাকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি যেনো পুরো বাংলাদেশকে আবার আমরা সামনের সারিতে থেকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারি। সেজন্য আমাদের নাহিদ ইসলাম যেন ওই ক্ষমতার মন্ত্রণালয় ছেড়ে আবারো জনতার কাতারে এসে দাঁড়ান। আমরা বিশ্বাস করি যাদের কাছে ক্ষমতার চেয়ে জনতা আগে ছিল তারা জনতার ডাকে যেকোনো মূহুর্তে যেকোনো ক্ষমতার পথ ছেড়ে আবারো জনতার কাতারে আসতে পারে।’

তিরি আরো বলেন, ‘আমরা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সবাইকে একসাথে রেখে বাংলাদেশে আবার নতুন একটি দল করতে চাচ্ছি। আমাদের অনেক আশা-আকাঙ্খা রয়েছে। বিগত ১৬ বছর যে চর্চাগুলো ছিল আমরা এখন আবার সে চর্চাগুলো নতুন করে দেখতে পারছি। স্পষ্ট কথা যারা এইসব চর্চাগুলো করে এসেছে তাদের রক্তে ঐ চর্চা একদম মিশে গিছে। সেই চর্চা থেকে বের হয়ে আসতে তাদেরকেই নেতৃত্ব দিতে হবে।’

সারজিস আলম বলেন, ‘বাংলাদেশে চাঁদাবাজি ছিল, চাঁদাবাজি হচ্ছে। সিন্ডিকেট ছিল, সিন্ডিকেট আছে। সোনারগাঁওয়ে শিল্প নগরীর বিভিন্ন জায়গায় দখলদারিত্ব যা ছিল, তাই আছে। বিভিন্ন স্পট থেকে শুরু করে যত টাকার ভাগ-বাটোয়ারা হতো এখন তার চেয়ে কম হয় না বরং আরো বেশি হয়। এগুলো বন্ধ করতে হলে সবাইকে ঐকবদ্ধ হতে হবে। মনে রাখতে হবে, অভ্যূত্থানের লড়াইয়ে ৫-৬ জুন আমরা ৫শ’ জনও রাজপথে ছিলাম না। কিন্তু ৫ আগস্টে ৫ কোটি মানুষ পুরো বাংলাদেশের রাজপথে নেমেছিলাম। এজন্যই সময় দিতে হবে, সাহসীকতার সাথে রাজপথে থাকতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্য যদি সৎ আর ন্যায় হয় তাহলে লড়াই দীর্ঘ হওয়া সত্বেও জয় সুনিশ্চিত।’

সারজিস আলম ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর আসছে, থানা পুলিশ ও কোর্টের অনেক বিচারক টাকার বিনিময়ে ফ্যাসিবাদের সাথে যুক্তদের সুযোগ দিচ্ছেন। অনেক রাজনৈতিক দলের নেতা ফ্যাসিবাদের দোসদের কাছ থেকে নানা কিছুর বিনিময়ে শেল্টার দিচ্ছেন। দয়া করে এ কাজটি করবেন না। তাহলে আপনাদের পরিণতি একদিন শেখ হাসিনার মতো হবে। কারণ, আমাদের গণঅভূত্থানে শহীদ ও আহতদের কথা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমার যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি তবে আমাদের কোন দেশী-বিদেশী শক্তির শেল্টারের প্রয়োজন হবে না। হাসিনার বিরুদ্ধে যখন আন্দোলন করছিলাম তখন আমার ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। তাই আমাদের কোন শেল্টারের প্রয়োজন হয়নি।’

সারজসি আলম বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেকে এখন রাজনীতি করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে। বিগত ১৫-১৬ বছরে কোনো নেতাকে কাছে পেয়েছেন? কোনো নেতা আত্মগোপন কিংবা দেশের বাহিরে থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সুবিধা আদায় করেছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বহু নেতা আছে যাদের বিগত ১৬ বছর জনগণ খুঁজেও পায়নি। তারা এখন নতুন করে নতুন রূপে এ বাংলাদেশে এসেছেন। তারাই এখন আপনাদের মাথায় হাত বোলাচ্ছেন। কঠিন সময়ে যাদের পাশে পাওয়া যায়নি তাদেরকে নেতা হিসেবে মেনে নেয়ার দয়া দেখাবেন না।’

সর্বশেষ সংবাদ

ইরানে এক বছরে প্রায় এক হাজার জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

ইরান গত বছর বিভিন্ন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত প্রায় এক হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর করেছে। আন্তর্জাতিক দুটি মানবাধিকার সংস্থা...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ