যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের বাণিজ্যিক অংশীদারের বিরুদ্ধে এবার প্রতিশোধমূলক শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মূলত তার এই পদক্ষেপ বৈশ্বিক বাণিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ রাষ্ট্র ভারত এই শুল্কের কারণে বড় ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিযোগ- ভারতের মতো দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত পণ্যে ‘অন্যায্যভাবে’ উচ্চ শুল্কারোপ করে।
ভারতীয় মিডিয়া এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর গড়ে তিন শতাংশ শুল্ক নিলেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ মার্কিন পণ্যে গড়ে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক আদায় করে।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের জন্য ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান রপ্তানিকারক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুল্কহার বাড়ালে ভারতের খাদ্যপণ্য, শাকসবজি, টেক্সটাইল, পোশাক খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, রত্ন ও গহনা, ওষুধ, গাড়ি, লোহা ও স্টিলের রপ্তানিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ভারতে ব্যবসা করা কঠিন। কারণ তাদের শুল্কহার অত্যন্ত বেশি। যদিও এখন থেকে তারা আমাদের ওপর যে শুল্ক আরোপ করবে, আমরাও তাদের ওপর একই পরিমাণ শুল্ক ধার্য করবো। এটি সহজ এবং কার্যকর ব্যবস্থা।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক সহজ করতে ভারত ৩০টিরও বেশি পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর কথা বিবেচনা করছে। পাশাপাশি প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি খাতে মার্কিন পণ্য আমদানি বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, আগামী এপ্রিল থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই শুল্ক ব্যবস্থা ভারতের অর্থনীতি ও বাণিজ্য সম্পর্কে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। তবে ভারত ছাড়া জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। স্বল্পমেয়াদে উচ্চ শুল্কের কারণে পণ্যের দাম বাড়তে পারে এবং ব্যবসার প্রতিযোগিতা কমতে পারে। যদিও দীর্ঘমেয়াদে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র ও এর বাণিজ্যিক অংশীদারদের মধ্যে ভারসাম্য আনতে সহায়তা করতে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি