যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের চুক্তির অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস আজ শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে। এর বিপরীতে ইসরায়েল তাদের কারাগার থেকে ৩৬৯ ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেবে। খবর আল জাজিরার।
মুক্তি পাওয়া ইসরায়েলিরা হলেন— আয়ার হর্ন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দ্বৈত নাগরিক সাগুই ডেকেল-চেন এবং রাশিয়া ও ইসরায়েলের দ্বৈত নাগরিক আলেকসান্দ্রে সাশা ত্রোফানভ।
হামাসের সামরিক বিভাগ আল কাসেম ব্রিগেড এবং ফিলিস্তিনি কারাবন্দিদের সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা প্যালেস্টাইনিয়ান প্রিজনার্স মিডিয়া অফিস পৃথক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে এসব তথ্য। প্রিজনার্স মিডিয়া অফিসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শনিবার মুক্তির অপেক্ষা থাকা কারাবন্দিদের মধ্যে ৩৩৩ জনই গাজার বাসিন্দা। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাদের। বাকি ৩৬ জন যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত।
গত সপ্তাহে হামাস হঠাৎ করে এই বন্দি বিনিময় স্থগিত ঘোষণা করেছিল। তাদের দাবি ছিল, ইসরায়েল চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে। হামাস জানায়, ইসরায়েল গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছিল, ভারী সরঞ্জাম ঢুকতে দিচ্ছিল না, যা ধ্বংসস্তূপ সরানোর জন্য প্রয়োজন। এছাড়া, তাঁবু ও অস্থায়ী ঘর পাঠানোতেও ইসরায়েল বাধা দেয়।
এই স্থগিতাদেশের কারণে যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়। এমনকি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দেন, শনিবারের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া হলে গাজায় তীব্র হামলা শুরু করবে ইসরায়েল।
তবে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর প্রচেষ্টায় হামাস পুনরায় বন্দি বিনিময়ে রাজি হয়েছে। এর ফলে শনিবার তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল তাদের কারাগারে থাকা ৩৬৯ ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ভূখণ্ডে ঢুকে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ জনকে হত্যা করে হামাসের যোদ্ধারা, সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায়ে ২৫১ জনকে। হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের উদ্ধারে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। টানা ১৫ মাস ধরে চলা সেই অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন ৪৮ হাজারেরও বেশি মানুষ, আহত হয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজারেরও বেশি এবং পুরোপুরি ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা।