spot_img

সবুজ দাগযুক্ত আলু কী সত্যিই বিষাক্ত?

অবশ্যই পরুন

প্রতিদিন রকমারি খাবারের পদ রান্না করা হয়। রকমারি পদগুলোয় প্রায়ই সবচেয়ে বেশি রাখা হয় আলু। যা ছাড়া একদিনও চলে না আমাদের। এ কারণে অনেকেই আলুর মৌসুমে প্রয়োজনের থেকে বেশি পরিমাণ কিনে সংরক্ষণে রেখে দেন। যা বছরের অন্যান্য সময় খাওয়া হয়।

এদিকে জমি থেকে আলু তোলা এবং সংরক্ষণে রাখার পর পরবর্তীতে আলুতে সবুজ দাগ দেখা যায়। এসব আলু খাওয়া নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন থাকে। সবুজ দাগযুক্ত আলু খাওয়া কী ঠিক, উপকারী―নাকি ক্ষতিকর? এ নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। সবুজ দাগযুক্ত আলু নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ প্রদানকারী ওয়েবসাইট হেলথলাইন। এবার তাহলে এ বিষয়ে জেনে নেয়া যাক।

আলু সবুজ হয় কেন: আলু সবুজ হওয়া একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। আলু যখন আলোর সংস্পর্শে আসে, তখন ক্লোরোফিল তৈরি করে। সবুজ রঙ্গক যা অনেক গাছপালা ও শৈবালকে তাদের রঙ দিয়ে থাকে। এ কারণে হালকা চামড়ার আলু হলুদ বা হালকা বাদামী থেকে সবুজ হয়ে যায়। এ প্রক্রিয়ায় গাঢ় চামড়ার আলুতেও হয়ে থাকে।

ক্লোরোফিল উদ্ভিদকে সালোকসংশ্লেষনের মাধ্যমে সূর্য থেকে শক্তি সংগ্রহ করতে সহায়তা করে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উদ্ভিদ সূর্যালোক, পানি ও কার্বন ডাইঅক্সাইড থেকে কার্বোহাইড্রেট ও অক্সিজেন তৈরি করতে পারে। ক্লোরোফিল কিছু আলুকে সবুজ রঙ দেয়। তবে আলু সবুজ হওয়া আবার সোলানাইন নামক একটি বিষাক্ত উদ্ভিদ যৌগ তৈরির সংকেতও দিতে পারে।

সবুজ আলু কি ক্ষতিকর না উপকারী: আলোর সংস্পর্শে আলু ক্লোরোফিল তৈরি করে, এ সময় এটি কিছু যৌগ তৈরি করতেও উৎসাহিত করতে পারে। যা পোকামাকড়, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। এসব যৌগের পরিমাণ উচ্চ মাত্রায় থাকলে তা মানুষের জন্য বিষাক্ত হতে পারে।

গ্লাইকোঅ্যালকালয়েড হচ্ছে প্রধান টক্সিন। যা আলু উৎপন্ন করে। আর সোলানাইন হচ্ছে এক ধরনের গ্লাইকোঅ্যালকালয়েড। সোলানাইন সাধারণত আলুর চামড়া ও মাংসে কম মাত্রায় এবং আলু গাছের কিছু অংশে উচ্চ পরিমাণে থাকে। তবে আলু যখন ক্ষতিগ্রস্ত বা সূযালোকের সংস্পর্শে আসে, তখন উপাদানটি বেশি মাত্রায় উৎপাদন করে।

সবুজ দাগ একটি আলুতে উচ্চ মাত্রার সোলানাইন থাকার বিষয়টি নির্দেশ করে। তবে এটি একদম নিখুঁত পরিমাপ নয়। কেননা, সবুজ রঙ ক্লোরোফিল দ্বারা সৃষ্টি হয়ে থাকে, সোলানাইন দ্বারা নয়। যদিও সোলানাইন ও ক্লোরোফিল উৎপাদনকে উৎসাহিত করে থাকে, তবে এসব স্বাধীনভাবেই উৎপাদিত হয়। একই অবস্থায় থেকে বিভিন্ন জাত বিভিন্ন পরিমাণে সোলানাইন তৈরি করতে পারে। আলুতে সবুজ দাগ পেলে তা খোসা ছাড়িয়ে এবং স্প্রাউট (চোখ) বা সবুজ অংশকে ফেলে দিলে তা নিরাপদ হয়ে যায়।

সোলানাইনের পরিমাণ: অনেক দেশেই উচ্চ মাত্রার সোলানাইন ও অন্যান্য গ্লাইকোঅ্যালকালয়েডযুক্ত আলু বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন প্রতি কেজি কাঁচা আলুতে ২০০-২৫০ মিলিগ্রাম বা প্রতি পাউন্ডে ৯১-১১৩ মিলিগ্রাম পর্যন্ত সীমাবদ্ধ করে। কানাডায় প্রতি কেজি আলুতে ২০০ গ্রাম বা প্রতি পাউন্ডে ৯১ মিলিগ্রামের নিয়ম রয়েছে। আবার ইউরোপের কিছু দেশে প্রতি কেজি আলুতে ১০০ মিলিগ্রাম বা প্রতি পাউন্ডে ৪৫ মিলিগ্রামের নিয়ম।

এদিকে নিরাপদ ব্যবস্থা থাকার পরও যদি আলু ভুলভাবে সংরক্ষণ করা হয় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে আলুতে উচ্চ মাত্রায় সোলানাইন তৈরি হতে পারে। একটি আলুতে যদি এ উপাদানের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে, তাহলে তা খাওয়া হলে অসুস্থ হতে পারেন। শিশুদের ক্ষেত্রে অসুস্থতার ঝুঁকি অনেক বেশি হতে পারে।

সোলানাইনের পরিমাণ অনেক বেশি গ্রহণের ফলে ডায়রিয়া, বমি, পেট ব্যথা, ঘাম, মাথাব্যথার মতো সমস্যা হতে পারে। এছাড়া যেকোনো সমস্যায় অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

গাজায় আগ্রাসন শুরু করলে ইসরাইলে ফের হামলা চালাবে ইয়েমেন : হাউছি

গাজা উপত্যকায় আবার সামরিক আগ্রাসন শুরু করলে ইসরাইলের স্বার্থে ফের আঘাত হানার হুমকি দিয়েছেন ইয়েমেনের হাউছি আনসারুল্লাহ আন্দোলনের নেতা...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ