spot_img

যে আনুগত্যে ঈমান নষ্ট হয়

অবশ্যই পরুন

আনুগত্য দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এর ওপর জগতজীবনের শৃঙ্খলা নির্ভরশীল। তবে সব আনুগত্য মানুষকে মুক্তি দেয় না, বরং কিছু কিছু আনুগত্য মানুষকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। এজন্য ইসলাম কিছু বিষয়ে যেমন আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছে, তেমন কিছু বিষয়ে আনুগত্য পরিহার করতে বলেছে।

ইসলামে আনুগত্যের ভিত্তি

মুমিনের জীবনে আনুগত্যের ভিত্তি ঈমান ও ইসলাম। সুতরাং একজন মুমিন আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নিঃশর্ত আনুগত্য করবে এবং তাদের বর্ণিত নীতির আলোকে মানুষের আনুগত্য করবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! তোমরা আনুগত্য কোরো আল্লাহর এবং আনুগত্য কোরো রাসুলের ও তোমাদের নেতাদের।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৫৯)

ফকিহ আলেমরা বলেন, নেতার আনুগত্য শরিয়তের আনুকূল্যের ওপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ নেতা যদি দ্বিন ও শরিয়তের অনুকূল আদেশ দেয়, তবে মানুষ তা মান্য করবে। নতুবা তা প্রত্যাখান করবে। এজন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘স্রষ্টার অবাধ্যতার প্রশ্নে সৃষ্টির আনুগত্য নয়।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ৩৬৯৬)

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘পাপ কাজে কোনো আনুগত্য নেই, আনুগত্য কেবল নেক কাজে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭২৫৭)

যে আনুগত্য ঈমান নষ্ট করে

কোরআন ও হাদিসে আনুগত্যের ক্ষেত্রেও শিরক থেকে বেঁচে থাকতে বলা হয়েছে। সেটা হলো এমন আনুগত্য যা মানুষ দ্বিন পালনে আল্লাহর সমকক্ষ করে তোলে। প্রাজ্ঞ আলেমরা বলেন, আনুগত্য দুই প্রকার : ১. লৌকিক বা জাগতিক আনুগত্য, ২. অলেৌকিক বা অপার্থিব আনুগত্য। বিশ্বাসী, নাস্তিক, ধার্মিক, অধার্মিক সবাই স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় জাগতিকভাবে পিতামাতা, পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্রের আনুগত্য করে। এ ধরনের জাগতিক আনুগত্য ইবাদত নয়। ফলে তা শিরকও নয়। এমনকি জাগতিক লোভ বা ভয়ে আল্লাহর হুকুমের বিপরীতে অন্যের আনুগত্যও ইবাদত নয়। ফলে তাও শিরক নয়।

‘বিশ্বাসজাত’ অলেৌকিক বা অপার্থিব আনুগত্য ইবাদত। এই প্রকারের আনুগত্য শিরক এবং তাতে মানুষের ঈমান নষ্ট হয়। এমন আনুগত্যের উদাহরণ পাদ্রী ও ধর্মযাজকদের প্রতি ইহুদি-খ্রিস্টানদের আনুগত্য। ইহুদি ও খ্রিস্টানরা দাবি করত যে, তাওরাত ও ইঞ্জিলের বিধি-বিধান বোঝা সাধারণ মানুষদের কাজ নয়। পাদ্রী ও পোপরা যা বলেন সেটিই চূড়ান্ত, তারা ‘অভ্রান্ত’।পবিত্র আত্মার সহায়তায় তারা সরাসরি আল্লাহর কাছ থেকে ইলম লাদুন্নি (অলেৌকিক জ্ঞান) লাভ করে। কাজেই তাদের ভুল হতে পারে না। তারা যা হালাল বলবেন তা প্রকৃতই হালাল এবং তারা যা হারাম বলবেন তা প্রকৃতই হারাম, যদিও তাওরাত ও ইঞ্জিলের বক্তব্য ভিন্ন হয়। এরূপ আনুগত্যকে আল্লাহ শিরকের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা আল্লাহ ব্যতীত তাদের পণ্ডিতদেরকে এবং সংসার-বিরাগী দরবেশ-বুজুর্গদেরকে প্রতিপালকরূপে গ্রহণ করেছে, এবং মরিয়ম তনয় মাসিহকেও।’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ৩১)

ফলে কারো বক্তব্যকে কোরআন ও হাদিসের ঊর্ধ্বে মনে করা, তাঁর কথাকে শরিয়তের দলিলের মতো আবশ্যক মনে করা এবং শরিয়তের নির্দেশনার বাইরে গিয়ে কারো আনুগত্য করা ঈমানের পরিপন্থী। এমন আনুগত্য মানুষের ঈমন নষ্ট হওয়ার কারণ হতে পারে।

আল্লাহ সবাইকে সঠিক জ্ঞান দান করুন। আমিন।

সর্বশেষ সংবাদ

‘মানুষ’ হিসেবে স্বীকৃতি পেলো নিউজিল্যান্ডের তারানাকি পর্বত

পর্বত কীভাবে মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পায়? অদ্ভুত শোনালেও নিউজিল্যান্ডের মাউন্ট তারানাকি পর্বতটিকে আইনিভাবে একজন ‘মানুষ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে দেশটির...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ