রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ এক নিমেষে বন্ধ করতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। দেশটির এক সিদ্ধান্তেই ‘সাথে সাথে’ যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমনটাই দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি এতদিন কেন সেটা ঘটল না তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি।
পূর্ব ইউরোপের যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য সৌদি আরবের কী করা উচিত, সেটাও বলে দিয়েছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেছেন, সৌদি আরব ও তেল রফতানিকারী অন্য দেশগুলোর উচিত অবিলম্বে তেলের দাম কমিয়ে দেয়া। তা হলেই রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যাবে।
আল জাজিরার উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এই খবর জানায়।
সুইজারল্যান্ডের দাভোস শহরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সভা চলছে। সেখানেই স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ফোরামের ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, তেল রফতানিকারী দেশগুলো যে এখনো তেলের দাম কমায়নি, তাতে তিনি বিস্মিত। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অনেক আগেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত ছিল সৌদি-সহ বাকিদের।
মধ্যপ্রাচ্যের পেট্রোলিয়াম রফতানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেকের সদস্যদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘সৌদি ও ওপেকের সকলকে আমি বলব, তেলের দাম কমান। আপনাদের এটা করতেই হবে। সত্যি কথা বলতে, এখনো যে এটা করা হয়নি, তাতে আমি অবাক। তেলের দাম কমলে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ সাথে সাথে বন্ধ হয়ে যাবে।’
ট্রাম্প আরো বলেন, ‘খনিজ তেলের দাম এখন অনেক বেশি। তাই যুদ্ধ চলবে। যুদ্ধ বন্ধ করতে চাইলে আপনাদের তেলের দাম কমাতে হবে। যা হচ্ছে, তার জন্য ওই দেশগুলো অনেকাংশে দায়ী। এত মানুষ মারা যাচ্ছে! তেলের দাম কমার পর আমি সুদের হারও কমাতে বলব।’
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর প্রায় তিন বছর ধরে চলছে রক্তক্ষয়ী এই সঙ্ঘাত। এই দীর্ঘ সময়ে দু’পক্ষের পাল্টা হামলায় হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ও লক্ষাধিক মানুষের বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে।
ক্ষমতার বাইরে থাকার সময় থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কথা বলে আসছেন ট্রাম্প। তিনি প্রায়ই বলতেন, ক্ষমতায় থাকলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধান করে ফেলতেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর সম্প্রতি তিনি বলেন, ইউক্রেন সঙ্ঘাত নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে আলোচনায় বসবেন তিনি। বৈঠকের আয়োজন চলছে বলেও দাবি করেন তিনি।
গত ২০ জানুয়ারি সোমবার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণ করেন তিনি। এরপর অবিলম্বে এই সঙ্ঘাতের সমাধান দাবি করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, যুদ্ধ বন্ধ না করলে রাশিয়া নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সূত্র : বাসস