বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তভার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) থেকে নিতে চায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর জন্য গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর সিআইডিকে চিঠি দিয়েছে দুদক।
চিঠিতে দুদক বলছে, রিজার্ভ চুরির ঘটনা তাদের তফসিলভুক্ত অপরাধ হওয়ায় তারা এই মামলার তদন্ত করতে চায়। যদিও এই বিষয়ে সিআইডির উত্তর পায়নি দুদক।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির বিষয়টি কমিশনের তফসিলভুক্ত অপরাধ। এজন্য এ সংক্রান্ত দায়ের করা মতিঝিল থানার মামলাটির কমিশন তদন্ত করতে চায়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। স্থানান্তরিত এসব টাকা ফিলিপাইনে পাঠানো হয়। দেশের অভ্যন্তরের কোনো একটি চক্রের সহায়তায় এই অর্থ পাচার হয়েছে বলে তখন ধারণা সংশ্লিষ্টদের। রিজার্ভ চুরির ঘটনা দীর্ঘদিন ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এরপর ওই বছরের ১৫ মার্চ রাজধানীর মতিঝিল থানায় মামলা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জুবায়ের বিন হুদা। অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনের ওই মামলায় সরাসরি কাউকে আসামি করা হয়নি। মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি।
সিআইডিতে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিল থানায় ২০১৬ সালে ১৫ মার্চ মামলা রুজু করা হয়। মামলাটি এখন সিআইডি তদন্ত করছে। সিআইডির তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিয়ার রহমানসহ মোট ১৩ জন সরকারি কর্মকর্তাকে ওই ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, দণ্ডবিধির ২১ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ২ ধারা ও ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ১১০ ধারা অনুযায়ী ওই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ জড়িত কর্মকর্তারা পাবলিক সার্ভেন্ট। বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ধারা অনুযায়ী কেবল দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক তদন্তযোগ্য হওয়ায় ওই মামলার তদন্ত সিআইডি থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনে হস্তান্তরের জন্য চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ওই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ওই সংক্রান্ত মামলা ও পরবর্তী তদন্ত কার্যক্রম কমিশন হতে পরিচালনার জন্য মামলার সিডি ও আলামতসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য রেকর্ডপত্র দুর্নীতি দমন কমিশনে হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এদিকে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানসহ একাধিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি। তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। যদিও গভর্নর কোথায় অবস্থান করছেন তা জানা যায়নি।