বিয়ের জন্য নারী-পুরুষকে শারীরিকভাবে সুস্থ ও মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়। নারীর ক্ষেত্রে কিছু বিষয় বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নারীর তলপেটে জরায়ুর দুই পাশে দুটি ডিম্বাশয় থাকে। এদের কাজ হলো ডিম্বাণু তৈরি ও হরমোন নিঃসরণ করা। ডিম্বাশয়ের ওপরই অনেকাংশে নারীর প্রজনন ক্ষমতা ও যৌনজীবন নির্ভর করে।
নারীর বেশি বয়সে বিয়ের ক্ষেত্রে যে ৫টি বিষয় মনে রাখতে হবে
সন্তানধারণ: একজন মেয়ে শিশু নির্দিষ্ট সংখ্যক ডিম্বাণু নিয়ে জন্মায়। আর এটাই কিন্তু পরবর্তী জীবনে তার সন্তানধারণের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। জন্মের পর নারীর শরীরে নতুন করে কোনো ডিম্বাণু তৈরি হয় না। প্রতি মাসে ঋতুচক্রের মাধ্যমে ডিম্বাণু নিঃসরিত হয়। ফলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিম্বাণুর পরিমাণ এবং গুণগত মান কমতে থাকে। এতে নারীর সন্তানধারণ ক্ষমতা ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে। আমেরিকার এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই ডিম্বাণুর হ্রাস প্রক্রিয়া শুরু হয় ৩২ বছর বয়স থেকে। নারীর বয়স ৩৭ পার হলে এই সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করে। তখন স্বাভাবিকভাবে নারীর সন্তানধারণের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। তাই বিয়ে বেশি বয়সে বিয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টি মনে রাখতে হবে।
গর্ভধারণজনিত জটিলতা: অধিক বয়সে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেশি থাকে। জন্মগত ত্রুটি বা অটিস্টিক শিশু জন্মের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। গর্ভজনিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। এসব রোগের প্রভাবে মা ও গর্ভস্থ শিশুর ঝুঁকি অনেক বৃদ্ধি পায়।
প্রসবকালীন জটিলতা: নারীর প্রসবপথ তৈরি হয় নরম মাংস, তরুণাস্থি এবং শ্রোণিচক্রের হাড়ের সমন্বয়ে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই তরুণাস্থি সংকোচন-প্রসারণ এবং শ্রোণিচক্রের অস্থিসন্ধির নড়াচড়ার ক্ষমতা কমতে থাকে। ফলে বেশি বয়সে গর্ভবতীদের বিলম্বিত প্রসবের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ত্রিশ এবং তদূর্ধ্ব বছর বয়সের নারী যারা প্রথম গর্ভবতী হন তাদের ক্ষেত্রে এই বিলম্বিত প্রসব হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। এসব মিলে সিজারিয়ান ডেলিভারির ঝুঁকি বেড়ে যায়।
যৌনজীবন: গবেষণায় দেখা গিয়েছে – হরমোনের প্রভাবে বিশ থেকে তিরিশ বছর বয়সে নারী তার যৌন সম্পর্ককে চমৎকার উপভোগ করেন। চল্লিশ বছর থেকে নারীর যৌন-আকাঙ্ক্ষা হ্রাস পেতে থাকে। কারণ তখন হরমোন তৈরির ক্ষমতা কমতে থাকে।
বয়সজনিত অসুখ: বয়স বৃদ্ধির সাথে নারীর জরায়ুর টিউমার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে – ৪০ বছরের পর প্রতি ১০০ জন নারীর মধ্যে ৪০ জনেরই এই টিউমার হতে পারে। নারীর প্রজনন স্বাস্থ্যে এই টিউমারের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এছাড়াও বয়সজনিত অন্যান্য সাধারণ অসুখ যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ,থাইরয়েড হরমোনের তারতম্য ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি বাড়তে থাকে।