spot_img

নম্রতা ও কোমলতা আল্লাহর বিশেষ রহমত

অবশ্যই পরুন

কোমলতা ও নম্রতা মানবচরিত্রের অন্যতম সুন্দর ও মহত্ গুণ। এ দুটি গুণ মানুষকে অনন্য উচ্চতায় সমাসীন করে। কোমলতা ও নম্রতার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে ইসলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে কোমলতা থেকে বঞ্চিত, সে কল্যাণ থেকেও বঞ্চিত।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৫৯২)

সাহাবায়ে কেরাম পারস্পরিক সহানুভূতিশীল ছিলেন। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে তাদের এ গুণের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘মুহাম্মদ আল্লাহর রাসুল। তাঁর সঙ্গে যারা আছে তারা কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল।’ (সুরা ফাতহ, আয়াত : ২৯)

কোমলতা ও নম্রতা আল্লাহ তাআলার পছন্দনীয় গুণ। আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ কোমল ও নম্র। তিনি কোমলতা ও নম্রতা পছন্দ করেন। আর তিনি নম্রতার কারণে যা দান করেন, তা কঠোরতা কিংবা অন্যকোনো কারণে দান করেন না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৯২৭)

অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) আয়েশা সিদ্দিকা (রা.)-কে বলেন, ‘তুমি কোমলতা ও নম্রতা নিজের জন্য আবশ্যক করে নাও। কঠোরতা ও নির্লজ্জতা থেকে নিজেকে বাঁচাও। যে জিনিসে নম্রতা ও কোমলতা থাকে, সেটাই তার সেৌন্দর্যের প্রতীক হয়। আর যে জিনিস হতে তা প্রত্যাহার করা হয়, তা ত্রুটিপূর্ণ হয়ে পড়ে।’ (মিশকাত, হাদিস : ৪৩১)

রাসুলুল্লাহ (সা.) সবসময় নম্রতা প্রদর্শন করতেন। কেউ তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলেও তিনি কারো ব্যাপারে নম্রতা ও কোমলতা পরিত্যাগ করতেন না। এ কোমলতা আল্লাহ তাআলার রহমতেরই বিশেষ ফলস্বরূপ। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘(হে নবী!) আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের প্রতি কোমল হূদয় হয়েছেন। পক্ষান্তরে আপনি যদি রূঢ় প্রকৃতির ও কঠিন হূদয়ের হতেন, তাহলে তারা আপনার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো। কাজেই আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য (আল্লাহর কাছে) ক্ষমাপ্রার্থনা করুন।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৫৯)

এ আয়াতে দুটি বিষয় বিশেষভাবে লক্ষণীয়-

এক. এখানে কোমলতা ও নম্রতাকে আল্লাহতায়ালার বিশেষ রহমত বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সুতরাং এখান থেকে বুঝা গেল, নম্র ও কোমল কেবল সে ব্যক্তিই হতে পারে, যার মধ্যে আল্লাহতায়ালার বিশেষ রহমত রয়েছে।

দুই. রাসুল (সা.)-কে উদ্দেশ্য করে এই আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, এই কোমলতা, সদ্ব্যবহার, ক্ষমা প্রদর্শন, দয়া ও করুণা করার গুণ যদি আপনার মধ্যে না থাকত, তাহলে মানুষের সংশোধনের যে দায়িত্ব আপনার উপর অর্পণ করা হয়েছে তা যথাযথভাবে সম্পাদিত হতো না। মানুষ আপনার মাধ্যমে আত্মসংশোধন ও চারিত্রিক সংস্কার সাধনের উপকরিতা লাভ করার পরিবর্তে আপনার কাছ থেকে দূরে সরে যেতো। সুতরাং এখান থেকে বুঝা যায়, কাউকে কোমল ও নম্র আচরণে যতটা সংশোধন করা যায়, কঠোর আচরণে তা করা যায় না। এবং কঠোর আচরণের দ্বারা আশপাশের মানুষজন ধীরে ধীরে ব্যক্তি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, দূরে সরে যায়। তাই মানুষের ভালোবাসা পেতে হলে কোমল আচরণের অধিকারী হওয়া অত্যাবশ্যক।

এক হাদিসে আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, ‘একবার একদল ইহুদি রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কাছে এসে বলল, আস-সামু আলাইকুম (তোমার মরণ হোক)। আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) এটা শুনে (রাগান্বিত হয়ে) বললেন, বরং তোমাদের মৃত্যু হোক এবং তোমাদের উপর আল্লাহর অভিশাপ ও গজব বর্ষিত হোক। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, Èআয়েশা! একটু থামো। নম্রতা অবলম্বন করা তোমার কর্তব্য। রূঢ়তা ও অশালীনতা বর্জন করো।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬০৩০)

আল্লাহ তাআলা আমাদের নম্র ও কোমল হূদয় দান করুন। আমিন।

লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ
রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

 

সর্বশেষ সংবাদ

ভাগ্যের ফেরে পেট্রল পাম্পে কাজ নেন ঐশ্বরিয়ার সহ-অভিনেতা!

বলিউডের ঐশ্বরিয়া, শাহরুখ খানের সহ-অভিনেতা ছিলেন। একের পর এক সুপারহিট সিনেমায় দাপুটে অভিনয়। রজনীকান্ত এবং কমল হাসানের মতো অভিনেতারা...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ