মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। পাশাপাশি কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে সংযুক্ত করার কথা বলে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন তিনি।
অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচারের জন্য কানাডাকে দায়ী করে ট্রাম্প এই শুল্ক হুমকি দেন। এমনকি পদত্যাগী কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘গ্রেট স্টেট অব কানাডার গভর্নর’ বলেও ব্যঙ্গ করেন তিনি।
ট্রাম্পের এই বক্তব্যে কানাডার রাজনীতিবিদ ও অর্থনীতিবিদরা সমালোচনা করেছেন। ব্যাংক অব মনট্রিয়োর প্রধান অর্থনীতিবিদ ডগলাস পোর্টার বলেন, “এমন বক্তব্য একেবারেই অপ্রত্যাশিত। ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্যেও কানাডাকে শত্রু হিসেবে দেখার কোনো প্রবণতা ছিল না, তাই তার এই মন্তব্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের পরিচালক টনি স্টিলো বলেছেন, “ট্রাম্প নিজের সুবিধার জন্য আগেও চুক্তি বাতিল করেছেন। নাফটা চুক্তি বাতিল করে ইউএসএমসিএ কার্যকর করলেও এখন তিনি একে খারাপ চুক্তি বলে আখ্যা দিচ্ছেন।”
গত বছরের প্রথম ১১ মাসে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৭০০ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার কানাডা, যেখানে তারা ট্রাক, গাড়ি ও জীবাশ্ম জ্বালানি রপ্তানি করে। একইভাবে কানাডার রপ্তানি পণ্যের তিন-চতুর্থাংশের বেশি যায় যুক্তরাষ্ট্রে, যার মধ্যে এক-চতুর্থাংশ অপরিশোধিত তেল।
আলবার্টার মুখ্যমন্ত্রী ড্যানিয়েল স্মিথ এক্সে লিখেছেন, “শুল্ক আরোপ মার্কিন তেল পরিশোধন শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং তাদের ভোক্তাদের বাড়তি মূল্য দিতে হবে। এটি হবে নিজের পায়ে গুলি করার মতো বিষয়।”
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হুমকির জবাবে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে কানাডা। কানাডার দৈনিক *গ্লোবাল অ্যান্ড মেইল* জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত, সিরামিক, কাচ, ফুল, ও ফ্লরিডা কমলা জুসসহ বেশ কিছু পণ্যে শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে কানাডা।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালেও ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা বাণিজ্য বিরোধ দেখা দিয়েছিল, যা এক বছর পর সমাধান হয়। তবে এবার পরিস্থিতি কতটা গড়াবে তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করলে কানাডার জিডিপি ২ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে এবং অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিতে পারে।