প্রাচীনকাল থেকে নিমপাতার ব্যবহার চলে আসছে। প্রতিদিন নিমপাতা খেলে শরীরে অনেক উপকার পাওয়া যায়। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে, এর অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। বলা হয়ে থাকে নিমগাছের ফুল, বীজ, ছাল, শাখা প্রভৃতি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবকিছুই নানাবিধ উপকার করে। প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটি নিমপাতা খেলে শরীরে আশ্চর্যজনক পরিবর্তন ঘটে।
জানুন নিমপাতার উপকারি দিকগুলি
পুষ্টি উপাদান: নিমে রয়েছে প্রদাহরোধী, অ্যান্টি-হাইপারগ্লাইসেমিক, অ্যান্টি-আলসার, অ্যান্টি-ম্যালেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ভাইরাল, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-মিউটাজেনিক, অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্য। নিমে ভিটামিন এ, সি, ক্যারোটিনয়েড, অলিক, লিনোলিকের মতো যৌগ রয়েছে।
কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে: জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ ইত্যাদি নানা কারণে আজকাল কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য নিম ওষুধের মতো কাজ করে। নিমপাতায় উপস্থিত ফাইবার অন্ত্রের গতিবিধি উন্নত করে ও পেট ফাঁপা থেকেও মুক্তি দেয়।
সুগার নিয়ন্ত্রণ: বিশেষজ্ঞদের মতে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিম একটি অলৌকিক ওষুধের মতো কাজ করে। এছাড়াও নিম পাতার গুঁড়ো খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যায়।
‘ফাইটোথেরাপি রিসার্চ’ জার্নালে প্রকাশিত ২০০৯ সালের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ১২ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ২ গ্রাম নিমের গুঁড়ো গ্রহণ করেছেন তাদের রক্তে শর্করা (এফবিএস), (এইচবিএওয়ানসি) মাত্রা এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
অন্ত্রের সংক্রমণ রোধ করে: বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনি যদি খালি পেটে নিম খান তবে অন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে এবং অ্যালিমেন্টারি ক্যানাল প্যাথোজেন থেকে রক্ষা পাবে। পরিবর্তিত জীবনধারা, খাদ্য ও পানীয় অভ্যাসের কারণে অনেকেই অন্ত্রের সংক্রমণে ভুগছেন। খালি পেটে নিমপাতা খেলে এই সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
মাড়ির সমস্যার সমাধান করে: যারা মাড়ি ফুলে যাওয়া, মাড়ি থেকে রক্তপড়া এবং নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধে ভুগছেন তারা নিম চিবিয়ে খেলে উপকার পেতে পারেন।
২০১৫ সালে ‘জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল পিরিওডন্টোলজিতে’ প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা যায়, যারা নিমপাতা চিবিয়েছেন তারা মাড়ির ব্যথা এবং রক্তপাত উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।