spot_img

ইত্যাদির অনুষ্ঠানে কেউ হামলা করতে আসেনি: হানিফ সংকেত

অবশ্যই পরুন

বাংলাদেশের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’। যার পরিকল্পক, নির্মাতা ও উপস্থাপক হলেন, হানিফ সংকেত। বরাবরই দেশের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন স্থানে শুটিং করেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় এবার বেছে নিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলের টংকনাথ জমিদারবাড়ি।

কিন্তু শুটিং শুরুর কিছুক্ষণ পর চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানের পরিকল্পক, নির্মাতা ও উপস্থাপক হানিফ সংকেত জানান, এটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এখানে কিন্তু কোনো ঝগড়া নেই, মারামারি নেই। হামলা নেই।
এখানে কেউই মারামারি করতে আসেনি, হামলাও করতে আসেনি। এখানে এসেছিল উৎসুক জনতা। তারা এসেছে ‘ইত্যাদি’ দেখবে, আমাদের দেখবে, ‘ইত্যাদি’র শুটিং দেখবে বলে। আমাদের ভালোবাসে বলেই তারা এসেছে। সবাই পরে খুব দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা এ–ও বলেছে, ‘আপনাদের ভালোবাসে, এটা তো অন্যায় না। ভালোবাসে বলেই এই ঘটনা ঘটেছে।’

হানিফ সংকেত বলেন, এত দর্শক হবে আমরা বুঝতে পারিনি। তাদের জায়গা দিতে পারিনি বলে এমনটা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা অনুষ্ঠান শুরু করি সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়। সাড়ে সাতটা কি আটটার সময় ঘটনার সূত্রপাত, যখন আমি মঞ্চে উঠলাম। ওঠার পর যখন কথা বললাম, তখনই বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। এরপর একটা নাচ করলাম। তারপর রবি চৌধুরী ও লিজার গানের অর্ধেকটা করলাম, তখন দ্বিতীয় বিশৃঙ্খলা শুরু হয়।

এমন অবস্থায় আমি প্রশাসনকে ডেকে বললাম, ‘এভাবে অনুষ্ঠান করা যাবে না। মানুষ শান্ত হোক, তারপর অনুষ্ঠান শুরু করব। আপাতত আমরা অনুষ্ঠান কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখি।’ আমরাও অনুষ্ঠানের দৃশ্যধারণ বন্ধ করে দিয়ে লাইট বন্ধ করে দিলাম। জানিয়ে দিলাম, ‘অনুষ্ঠান আপাতত হচ্ছে না। আপনারা শান্ত হন।’ এ–ও অনুরোধ করেছি, ‘চলে যান। পরবর্তী সময় আমরা চিন্তা করব কী করা যায়।’ লোক যেতে তিন ঘণ্টা লেগে গেল।

এক থেকে দেড় ঘণ্টা অনুষ্ঠানের দৃশ্যধারণ বন্ধ রেখে রাত সাড়ে ৯টা কি ১০টার দিকে আবার শুরু করেছি। দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শুটিং করেছি। এখানকার স্থানীয় লোকজন খুবই আন্তরিক। তাঁরা এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। লজ্জিত হয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, ‘ঠাকুরগাঁওয়ের লোক ভালো। তখন আমিও বলেছি, ‘আমি তো বলিনি ঠাকুরগাঁওয়ের লোক খারাপ। ভালো বলেই তো শুটিং করতে এসেছি।’ আসলে সেখানে সমস্যাটা হয়েছে কি, আমরা পরিস্থিতির শিকার হয়ে গেছি। আমরাও বুঝিনি যে এত লোক হবে। কর্তৃপক্ষও বোঝেনি যে এত লোক হবে। আমাদের জায়গাটা আসলে আরও বড় হওয়া উচিত ছিল।

সাধারণত যেকোনো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বা দেশের কোনো ঐতিহ্যবাহী স্থানে আমরা অনুষ্ঠানটা করি। রানীশংকৈল উপজেলায় টংকনাথের রাজবাড়ি নামে একটি জমিদারবাড়ি আছে, যেটা খুবই বিখ্যাত, প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শনও। তাই আমরা ওখানকার জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলি। তাঁরা বললেন, ‘এটা তো গ্রামীণ এলাকা, এখানে অত লোক পাবেন? অন্য জায়গায় করা যায় কি না, ঠাকুরগাঁওয়ে।’ আমি তখন বলেছি, ‘ঠাকুরগাঁওয়ে করব না। আমরা তো মাঠে করি না।’ তখন তাঁরাও বলছিলেন, ‘দর্শক না এলে হবে?’ আমি তখন বলেছি, ‘আমাদের দুই থেকে তিন হাজার দর্শক হলেই চলবে। আমরা তো স্থাপনার বাইরে যেতে পারব না।’ সবকিছু মিলে টংকনাথ রাজবাড়িতে আমরা করলাম। অনুষ্ঠানের আগে আমরা আট হাজার প্রবেশ পাস দিয়েছি। ওখানে কিন্তু আর্মি, পুলিশ সবাই ছিল। যখনই আমরা অনুষ্ঠান শুরু করলাম। দর্শক তালি দিল। যেই আমি মঞ্চে এলাম, শুনলাম, চারদিক থেকে তিন কিলোমিটারের মতো রাস্তা প্যাকড। পাঁচ লাখের অধিক লোক। এত মানুষকে আমি কোথায় বসতে দেব। লোকজন করল কি, বাঁশের ব্যারিকেড ছিল, তা ভেঙে ঝাঁপিয়ে পড়ল। তখন তো ম্যাচাকার অবস্থা।

সাংঘাতিক স্মুথ হয়েছে। ঘটনার পর যখন শুটিং শুরু করেছি, সেখানে থাকা সবাই বেশ আন্তরিক ছিল। আমাদের অনুষ্ঠান যখন শেষ হয়, তখনো দেড় থেকে দুই হাজার মানুষ ছিল। আমরা যখন অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিই, তখন স্বাভাবিকভাবে লোকজন কমে যেতে শুরু করে। নারীরা বাসায় ফিরে যান। এর মধ্যে শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠান করতে পারব কি না, এ নিয়ে তারাও সন্দেহের মধ্যে ছিলেন। আমরাও তা–ই চেয়েছিলাম, না হলে তো সমস্যা। আমরা তো আর সবাইকে জায়গা দিতে পারব না।

সর্বশেষ সংবাদ

সিরিয়ায় আসাদ অনুগত কর্মকর্তার জনসম্মুখে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের আন্দোলনের মুখে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত ও তথ্যদাতা সরকারি এক কর্মকর্তার জনসম্মুখে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ